স্কলারশিপ

জিআরই কি? জেনে নিন কোন কোন দেশে প্রযোজ্য জিআরই

মাস্টার্স ও পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তির ক্ষেত্রে আবেদনকারীর দক্ষতা যাচাইয়ের জন্য বিশ্বে বহুল ব্যবহৃত পরীক্ষাটির নাম GRE (জিআরই)। এর পূর্ণরূপ হচ্ছে (Graduate Record Examination)।

বলা বাহুল্য, দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে পড়ালেখার মান ও মূল্যায়ন পদ্ধতি ভিন্ন হয়ে থাকে। গ্রেড পয়েন্ট ৪.০০ অর্জন করতে কোথাও ১০০ তে ৮০ নম্বর পেলেই হয়ে যায়, আবার কোথাও ৯৭ নম্বর পেতে হয়। তাই এক দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সঙ্গে অন্য দেশের শিক্ষার্থীর সিজিপিএ তুলনা করে, সত্যিকার অর্থে কে বেশি মেধাবী, তা নির্ণয় করা বেশ দুরূহ। এমতাবস্থায় যদি উভয় শিক্ষার্থী একটি বিশ্বমানের মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন, তাহলে স্কোর দেখে তাদের মেধার তুলনামূলক সঠিক চিত্র পাওয়া সম্ভব।

প্রতিবছর ১৬০টি দেশের ১০০০ এরও বেশি টেস্ট সেন্টারে হাফ মিলিয়নেরও বেশি শিক্ষার্থী GRE টেস্টে অংশগ্রহণ করে। Educational Testing Service (ETS) নামের একটি নন-প্রফিট অর্গানাইজেশন পরীক্ষাটির আয়োজন করে থাকে।

যেসব দেশের জন্য জিআরই প্রযোজ্য

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর ও ইউরোপিয়ান কিছু দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির আবেদনের জন্য GRE স্কোর থাকা বাধ্যতামূলক। এটি মূলত ইঞ্জিনিয়ারিং ও সায়েন্স বিষয়ক কোর্সে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা মূল্যায়নের পরীক্ষা হলেও বর্তমানে বিজনেস এবং ল” প্রোগ্রামগুলোতেও GRE(জিআরই) স্কোর গ্রহণ করা হচ্ছে। এদিকে যেসব দেশের জন্য এটি প্রযোজ্য নয়, সেসব দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও ভর্তির ক্ষেত্রে যাদের ভালো GRE স্কোর রয়েছে, তাদের গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। তাছাড়া এটি সবসময়ই প্রোগ্রামগুলোতে শিক্ষার্থীদের ভালো ফান্ড পেতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

যেভাবে পরীক্ষা নেওয়া হয়

বর্তমানে দু’ভাবে পরীক্ষা নেওয়া হয়। সেগুলো হলো- জেনারেল টেস্ট ও সাবজেক্ট টেস্ট। তবে, জিআরই বলতে মূলত জেনারেল টেস্টকেই ধরা হয়ে থাকে। জেনারেল টেস্ট এমএস, এমবিএসহ প্রায় সব প্রোগ্রামে গ্রহণ করা হয়।

জেনারেল টেস্টে শিক্ষার্থীদের তিনটি ধাপে পরীক্ষা নেওয়া হয়। সেগুলো হচ্ছে- ভার্বাল, কোয়ান্টেটিভ রিজনিং এবং এনালিটিক্যাল রাইটিং। উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য স্কোর রেঞ্জ– ভারবাল রিজনিংয়ে ১৩০ থেকে ১৭০ এর মধ্যে, কোয়ান্টেটিভ রিজনিংয়ে ১৩০ থেকে ১৭০ এর মধ্যে এবং এনালিটিক্যাল রাইটিংয়ে ‘০’ থেকে ৬ এর মধ্যে স্কোর থাকতে হয়।

 

এনালিটিক্যাল রাইটিংয়ের সময় এক ঘণ্টা। এসময়ে একজন শিক্ষার্থীকে ইস্যুভিত্তিক এবং আরগুমেন্টেটিভ দুই ধরনের রচনা লিখতে হয়। প্রতি সেকশনে সময় বরাদ্দ থাকে ৩০ মিনিট। ইংরেজিতে লেখার দক্ষতা এবং বিশ্লেষণী দক্ষতা ভালো হলে রাইটিংয়ে সহজেই ৩.৫ – ৪ পাওয়া সম্ভব।

ভার্বালে দুই সেকশনে ২০টি করে সর্বমোট ৪০টি প্রশ্ন দেওয়া হয় এবং তার জন্য সময় থাকে এক ঘণ্টা। এদিকে কোয়ান্টিটেটিভে একই সংখ্যক প্রশ্নের জন্য ৩৫ মিনিট করে সর্বমোট ৭০ মিনিট দেওয়া হয়ে থাকে। প্রস্তুতি ভালো থাকলে উভয় সেকশনেই ২৬০-৩৪০ স্কোরের মধ্যে অর্জন করা সম্ভব।

 

এদিকে জিআরই সাবজেক্ট টেস্টে নির্দিস্ট একটি সাবজেক্টের দক্ষতা দেখা হয়। বর্তমানে গণিত, ইংরেজি সাহিত্য, পদার্থবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান ও রসায়নের উপর জিআরই সাবজেক্ট টেস্ট আছে। বায়োকেমিস্ট্রি, সেল এবং মলিকিউলার বায়োলজি এবং কম্পিউটার সায়েন্সসহ আরও বেশকিছু বিষয়ের উপর সাবজেক্ট টেস্ট নেওয়া হতো। তবে ২০১৬ সালের পর থেকে সেগুলোর উপর আর জিআরই সাবজেক্ট টেস্ট নেওয়া হচ্ছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *