আন্তর্জাতিক সর্বশেষ

গাজায় মানবিক সহায়তায় বাধা দিচ্ছে ইসরায়েল : ইইউ

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। অঞ্চলটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ইতোমধ্যেই ভেঙে পড়েছে এবং এরসঙ্গে সেখানে দেখা দিয়েছে তীব্র মানবিক সংকট।

এমন অবস্থায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন অভিযোগ করেছে, গাজায় মানবিক সহায়তায় বাধা দিচ্ছে ইসরায়েল। এ বিষয়ে প্রমাণ রয়েছে বলেও সংস্থাটি জানিয়েছে। শনিবার (১৬ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতি বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি জোসেপ বোরেল শুক্রবার বলেছেন, ইসরায়েল গাজায় মানবিক সাহায্য প্রবেশে বাধা দিচ্ছে এবং তাদের এই কর্মকাণ্ডের প্রমাণও রয়েছে।

ইইউয়ের শীর্ষ এই কূটনীতিক এর আগে বলেছিলেন, ‘গাজায় যুদ্ধের অস্ত্র হিসাবে অনাহারকে ব্যবহার করছে ইসরায়েল।’

বোরেল জানিয়েছেন, চলমান মানবিক সহায়তা সম্পর্কিত সংকটের কারণ হচ্ছে সীমান্তে ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণ। যুক্তরাষ্ট্রের পিবিএস টেলিভিশনে তিনি বলেন, ‘যদি মানুষ অনাহারে থাকে। অনাহারে কেন থাকবে? সেখানে ওই লোকদের সাহায্য করার জন্য কোনো মানবিক সহায়তাই নেই? এবং কেন (এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে)? কারণ ইসরায়েল সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করছে এবং মানবিক সহায়তা আসতে দিচ্ছে না।’

গাজায় যুদ্ধের অস্ত্র হিসাবে ইসরায়েল অনাহারকে ব্যবহার করছে বলে তার মন্তব্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘আপনি কি মনে করেন গাজায় অনাহার রয়েছে? হ্যাঁ, গাজায় অনাহার আছে। লাখ লাখ মানুষ আক্ষরিক অর্থে অনাহারে রয়েছে, তাদের মধ্যে অনেক শিশু মারা যাচ্ছে।’

বোরেল প্রশ্ন করেন, ‘আপনি মানবিক সাহায্য আসতে বাধা দিচ্ছেন এবং মানুষ ক্ষুধার্ত থাকছে, এটিই কি (সংকটের পেছনে) যৌক্তিক কারণ নয়?

ইইউ ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে সমস্যা সমাধানের জন্য দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে বলেও বোরেল পুনর্ব্যক্ত করেন।

এর আগে গত সপ্তাহে গাজায় অনাহারকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে দাবি করেন ইইউর পররাষ্ট্র নীতির প্রধান জোসেফ বোরেল। তিনি অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে সহায়তার অপ্রতুল প্রবেশকে ‘মানবসৃষ্ট’ বিপর্যয় হিসাবেও বর্ণনা করেন।

বোরেল সেসময় বলেন, ‘অনাহারকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং যখন আমরা ইউক্রেনে এই ঘটনার নিন্দা করেছি, তখন গাজায় যা ঘটছে তার জন্যও আমাদের একই শব্দ ব্যবহার করতে হবে।’

এর আগে গাজা উপত্যকায় কমপক্ষে ৫ লাখ ৭৬ হাজার মানুষ বা ভূখণ্ডটির মোট জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ দুর্ভিক্ষ থেকে এক ধাপ দূরে রয়েছে বলে জাতিসংঘের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গত ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে জানিয়েছিলেন। একইসঙ্গে তিনি সেসময় সতর্ক করে বলেন, কোনও ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া না হলে গাজায় ব্যাপক দুর্ভিক্ষ ‘প্রায় অনিবার্য’ হয়ে উঠতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *