১৮ বছর বয়সী কিশোরী জুলিয়েট লামুর কানাডায় বসবাস করেন। গত ৬ জানুয়ারিতেও তিনি ছিলেন অন্য আট দশজন কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীর মতো সাধারণ একজন শিক্ষার্থী। তবে একদিন পর ৭ জানুয়ারি বনে যান ৪ কোটি ৮০ লাখ কানাডীয় ডলারের মালিক। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৩৮৪ কোটি টাকা।
এতো কম বয়সে কোটিপতি বনে যাওয়া এই কিশোরী কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি লটারি জেতার মধ্য দিয়ে ‘‘অকল্পনীয়” সম্পদের বনে গেছেন। গত ৭ জানুয়ারি লটারির ড্র হয়। সেদিন সবচেয়ে কম বয়সী কানাডীয় হিসেবে তিনি ৪ কোটি ৮০ লাখ কানাডীয় ডলারের জেতেন।
এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেকেই আচমকা অকল্পনীয় সম্পদের মালিক বনে গেলে নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেন না। তবে জুলিয়েট লামুর ব্যতিক্রম একজন মানুষ। পুরস্কার পাওয়ার পর পরই পরামর্শের জন্য বাবার কাছে ছুটে গেছেন তিনি। বাবাকে তিনি নিজের আর্থিক উপদেষ্টা হিসেবে বিবেচনা করেন। লটারির সিংহভাগ অর্থ বাবার পরামর্শ অনুসারেই খরচ করবেন বলে জানান তিনি।
শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) অন্টারিওভিত্তিক লটারি পরিচালনাকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান অন্টারিও লটারি অ্যান্ড গেমিং করপোরেশনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আনন্দ উদযাপন করেন জুলিয়েট।
এদিন তিনি বলেন, ‘‘প্রথম লটারির টিকিটেই পুরস্কার জিতে নেওয়ার বিষয়টি এখনো তার বিশ্বাস হচ্ছে না।”
অন্টারিওর বাসিন্দা জুলিয়েট বলেন, ‘‘লটারি টিকিট কেনার বিষয়টি ভুলেই গিয়েছিলাম। পরে শুনেছি, ৭ জানুয়ারি লটারির ড্র হয়েছে। তার এলাকারই কেউ একজন পুরস্কার জিতেছেন। তখন টিকিটটি খুঁজে বের করে মোবাইল অ্যাপের সহায়তায় নম্বরটি যাচাই করেন তিনি। হঠাৎই মোবাইলের স্ক্রিনে বিগ উইনার লেখা ভেসে ওঠে। সঙ্গে একটি জিঙ্গেল বাজতে থাকে।”
তিনি বলেন, ‘‘আমার সহকর্মী বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না। তিনি হাঁটু গেড়ে বসে পড়েছিলেন। তিনি চিৎকার করেছিলেন। অন্যরাও চিৎকার করে বলছিলেন যে, আমি ৪ কোটি ৮০ লাখ ডলারের লটারি জিতে গেছি।”
তিনি আরও বলেন, ‘‘লটারি কেনার পরামর্শটি আমি বাবার কাছ থেকেই পেয়েছিলাম।”
জুলিয়েটের স্বপ্ন তিনি চিকিৎসক হবেন। সে স্বপ্নপূরণে লটারিতে জেতা কিছু অর্থ বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছেন তিনি। চিকিৎসক হয়ে আবারও উত্তরাঞ্চলীয় অন্টারিওতে ফিরে যেতে চান তিনি। সেখানকার জনগণের সেবায় নিজেকে নিযুক্ত করতে চান।
জুলিয়েটের ইচ্ছা, লটারির অর্থ দিয়ে তিনি পরিবারকে নিয়ে আনন্দের সময় কাটাবেন। তিনি বলেন, ‘‘স্কুলে পড়াশোনা শেষ হলে আমি ঘোরার জন্য একটি মহাদেশকে বেছে নেব। এরপর পরিবারসমেত সেখানে ঘুরে বেড়াব, নতুন নতুন জিনিস দেখব। বিভিন্ন দেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চাই। তাদের ইতিহাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে চাই, তাদের স্বাদ নিতে চাই এবং তাদের ভাষায় বলা কথাগুলো শুনতে চাই।”
তিনি মনে করেন, ‘‘অর্থবিত্ত দিয়ে মানুষকে চেনা যায় না। কর্মের মধ্য দিয়েই মানুষ পরিচিতি পায়।”