বিদেশ শিক্ষা সর্বশেষ

আপনার কানাডা যাত্রায় কে হতে পারবে আপনার স্পন্সর, জানুন সঠিক তথ্য

কানাডায় কেউ একজন পড়াশোনা করতে গেছেন, বা চাকরি নিয়ে গেছেন। তিনি কি তার কোনও স্বজনকে বাংলাদেশ বা অন্য কোন দেশ স্পন্সর করে কানাডায় আনতে পারবেন?

উত্তর- না। স্পন্সর করার যোগ্যতা রাখেন কেবল কানাডার কোনও স্থায়ী অভিবাসী (পিআর) বা নাগরিক (সিটিজেন)। শুধু পিআর বা সিটিজেন হলেই হবে না, স্পন্সরশিপের যোগ্যতা অর্জনের জন্য তাকে কানাডায় বসবাসও করতে হবে, বা, নিদেনপক্ষে যাকে স্পন্সর করছেন তিনি কানাডার মাটিতে পা রাখার সাথে সাথে স্পন্সরকারিকেও তার সাথে কানাডায় বসবাস করার অঙ্গীকার করতে হবে। এ কারণে অনেক কানাডিয়ান কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন না বলে, তারা চাইলেও স্বজনদের কানাডায় স্পন্সর করে আনতে পারেন না। বলার অপেক্ষা রাখে না, কানাডার অনেক নাগরিক চাকরির কারণে পাশের দেশ আমেরিকায় বসবাস করেন।

প্রশ্ন জাগে, কেন স্পন্সরকারিকে কানাডায় বসবাস করতে হবে? কারণ শুনুন। স্পন্সরশিপ নিয়ে যে স্বজন কানাডায় আসছেন তার বা তাদের দেখভাল এবং নিত্য প্রয়োজনীয় খরচাদি মেটানোর জন্য তাদের আশেপাশে থেকেই এক ধরনের পাহারা দিয়ে থাকতে হয়। কানাডা সরকারের সাথে স্পন্সরকারির এ বিষয়ে লিখিত চুক্তি হয়, যে স্বজনকে দেশ থেকে স্পন্সর করে নিয়ে আসা হচ্ছে তার বা তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণে তিনি বাধ্য। ক্ষেত্রবিশেষে এ বাধ্যবাধকতা অনেক দীর্ঘ সময়, যেমন, বিশ বছর পর্যন্তও হতে পারে। এ সময়সীমার মধ্যে দেশ থেকে আসা মেহমান যদি কোনও কারণে কানাডা সরকারের আর্থিক সাহায্য-সহযোগিতা (সোশ্যাল অ্যাসিস্টান্স বা, ওয়েলফেয়ার) গ্রহণ করে থাকেন তা কানাডাকে ফেরত দিতেও স্পন্সরকারি অঙ্গীকারাবদ্ধ থাকেন। একবার ভেবে দেখুন, এটা কোন মাপের গুরুদায়িত্ব!

আপনি এ ধরনের অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করতে রাজি হলেই কি যে কাউকে কানাডায় স্পনসর করে কানাডায় নিয়ে আসতে পারেন? না, তা পারেন না। একটা উদাহরণ দেই। আমার এক দুঃসম্পর্কের ভাগ্নে তুখোড় মেধাবী। দেশের এক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সে অনার্স ও মাস্টার্সে প্রথম এবং দ্বিতীয় স্থান অধিকারের পরও মামার জোর নেই বলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে নেওয়া হয়নি। এখন থেকে প্রায় পনেরো বছর আগের কথা বলছি। একদিন সে আমাকে ইমেইল করলো, ‘মামা, আমি কানাডা ইমিগ্রেশন নিয়ে যেতে চাই, সেখানে গিয়ে পড়াশোনা করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই; আপনি কানাডার সিটিজেন বলে আমাকে কি স্পনসর করে নিয়ে যেতে পারবেন?’

দুঃখভারাক্রান্ত মনে তাকে সেদিন আমার বলতে হয়েছিল, ‘না, ভাগ্নে, তুমি কোন সুবিধা পাবে না। কারণ, তোমার সাথে আমার সরাসরি রক্তের সম্পর্ক নেই।’

সে আমাকে আর কিছু বলেনি, কিন্তু, আমারও সত্য বলার বিকল্প ছিল না। সে ছেলেও কিন্তু নাছোড়বান্দা। ওখানেই থেমে থাকেনি সে। কালাম নামের সেই ছেলে বর্তমানে কেবল ব্রিটেনের নাগরিকই নয়, ব্রিটেনের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকও। তাকে নিয়ে আমি খুব গর্ব করি। দেখুন, দূরের ভাগ্নে তো পরের কথা, বিশেষ ব্যতিক্রম ছাড়া কানাডায় আপন ভাগ্নে-ভাগ্নিকেও স্পন্সর করে নিয়ে আসা যায় না। আমেরিকার ইমিগ্রেশনের সাথে কানাডার ইমিগ্রেশনের এ এক বড় পার্থক্য। আমেরিকায় একজন ইমিগ্রেশন পেয়েছেন তো তার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজনরা দলে দলে আমেরিকায় পাড়ি জমাতেই থাকবেন যুগযুগ ধরে।

প্রশ্ন হলো, আর্থিক সক্ষমতা থাকলে একজন কানাডিয়ান পিআর বা সিটিজেন চাইলে সাধারণভাবে কাকে স্পনসর করে আনতে পারবেন? তালিকাটি বেশি দীর্ঘ নয়: স্বামী, স্ত্রী বা কমন ল পার্টনার, নির্ভরশীল পুত্রকন্যা এবং মাতাপিতা। বিশেষ ব্যতিক্রমী কিছু ক্ষেত্র বাদ দিলে কেবল এ সংক্ষিপ্ত তালিকায় বর্ণিতদেরই কানাডায় স্পন্সর করা যায়। এবার বুঝুন, কানাডা প্রবাসী যে ভদ্রলোক বাংলাদেশে বেড়াতে গেছেন তিনি আদৌ ওই মেয়েটিকে স্পন্সর করে কানাডায় নিয়ে আসতে সক্ষম হবেন কিনা। একদমই না। মেয়েটিকে প্রতারিত করতেই তার এ ফন্দি।

একটা ছোট্ট ঘটনা মনে পড়লো। কিছুদিন আগে এক ভদ্রলোক আমাদের কোম্পানি (এমএলজি ইমিগ্রেশন)- এর সাথে যোগাযোগ করলেন। তিনি পাকিস্তান হতে ইমিগ্রেশন নিয়ে আসা কানাডিয়ান নাগরিক। এক ভদ্রমহিলাকে তিনি বিয়ে করে এনেছেন বছর দেড়েক আগে। ভদ্রমহিলা তার সাথে দুর্ব্যবহার করছেন বলে তিনি আমাকে জানালেন। আমার সাথে মিটিং করে তিনি জানতে চাইছিলেন তার স্ত্রীকে ডিভোর্স দিলেও তাকে ভরণপোষণ দিতে হবে কিনা?

আমার উত্তর শুনে তিনি হতাশ হলেন। বললাম, ‘হ্যা জনাব, সে দায়িত্ব আপনাকে বহন করে যেতেই হবে। ডিভোর্সের সাথে এর সম্পর্ক নেই। কারণ, আপনি এ দায়িত্ব পালন করবেন বলে আন্ডারটেকিং দিয়েছেন বলেই কানাডা সরকার তাকে কানাডায় প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে।’

ভদ্রলোক তখন জানতে চাইলেন, তার স্ত্রী আলাদা বসবাস করে কানাডার সোশ্যাল অ্যাসিস্টেন্স বা ওয়েলফেয়ার নিলে তা পরিশোধের দায়িত্ব কার? বললাম, ‘সে দায়িত্বও আপনার।’

মূল লেখা পড়ুন এখানে

কানডায় উচ্চশিক্ষায় স্পন্সর ও আর্থিক বিষয়াদি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের সাথে কাজ করে আসছে লিডবার্গ এডুকেশন। তাই স্পন্সর, ব্যাংক সাপোর্ট কিংবা আর্থিল অন্যান্য বিষয় নিয়ে জানতে তাদের সাথে যোগাযোগ করুন এখানে

এছাড়া দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা সম্পর্কে যে কোন জিজ্ঞাসা বা স্কলারশিপের ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে ও আবেদন প্রক্রিয়া নির্ভুল ভাবে সম্পন্ন করত ভিজিট করুন লিডবার্গ এডুকেশন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *