সর্বশেষঃ ২০ হাজার টাকা বাজেটে সেরা ৫টি স্মার্টফোন, দেখুন স্পেসেফিকেশন
সর্বশেষঃ দাম্পত্য জীবনে পারস্পারিক সম্মান কেন জরুরি
সর্বশেষঃ সালমানের সাথে কাজ করলেই বুকে গুলি করে হত্যা করা হবে
সর্বশেষঃ বড় ছেলের ছবি দিয়ে 'মিস ইউ পাপা' লিখলেন শাকিব খান
সর্বশেষঃ ছেলের নামে বিতর্কিত মন্তব্য, সাইবার ক্রাইমে অভিযোগ অপূর্ব
সর্বশেষঃ ইলিশের মৌসুমেও নাগালের বাইরে দাম
বর্তমানে শিক্ষা খাতে প্রতিযোগিতা যত বাড়ছে, ততই বাড়ছে নিজেদের সঠিকভাবে উপস্থাপন করার প্রয়োজনীয়তা। আজকের দিনে কেবল ভালো পড়ানোই যথেষ্ট নয়—একটি স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজেদের দর্শন, গুণমান এবং মূল্যবোধকে মানুষের কাছে স্পষ্ট করে তুলে ধরতে না পারলে, তার প্রভাব পড়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সিদ্ধান্তে। ঠিক এই জায়গাটিতেই শিক্ষা খাতকে সামনে রেখে এক অভিনব দৃষ্টিভঙ্গি ও কৌশল নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশের উদ্ভাবনী ব্র্যান্ড মার্কেটিং এজেন্সি Switch X।
Switch X-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও আসিফ আদনান, একজন ব্র্যান্ড স্ট্র্যাটেজিস্ট ও কনসালট্যান্ট, যিনি ব্র্যান্ডিংকে শুধুমাত্র ডিজাইন বা প্রচার নয়, বরং প্রতিষ্ঠানের আত্মার গল্প বলার উপায় হিসেবে দেখেন।
আসিফ আদনান বলেন,
“আমরা কোনো এলোমেলো বা যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করি না। আমরা আগে শুনি—তাদের লক্ষ্য, দর্শন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। যদি তাদের মিশন ও ভিশন আমাদের কাছে অর্থবহ ও দায়বদ্ধ মনে হয়, তাহলে তবেই আমরা যুক্ত হই। আমরা শুধু অর্থের জন্য কোনো প্রতিষ্ঠানকে ব্র্যান্ড করতে চাই না। কারণ, শিক্ষা এমন একটি ক্ষেত্র, যেখানে একটি প্রজন্মের ভবিষ্যৎ জড়িত থাকে—এখানে দায়িত্ব ছাড়া কাজ করাটা আমাদের নীতির পরিপন্থী।”
আসিফের নেতৃত্বে Switch X ইতোমধ্যে কাজ করেছে বহু প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ড স্ট্র্যাটেজি, ডিজিটাল ক্যাম্পেইন, ভিজ্যুয়াল আইডেন্টিটি এবং কনটেন্ট প্রোডাকশন নিয়ে। শিক্ষা খাতের জন্য তারা তৈরি করেছে কাস্টমাইজড ভিডিও, গল্পনির্ভর কনটেন্ট ও ক্যাম্পেইন—যার মাধ্যমে একেকটি প্রতিষ্ঠানের মূল্যবোধ, শিক্ষার মান এবং পরিবেশ ফুটে ওঠে। তাদের কাজের পরিধিতে রয়েছে একাডেমিক ব্র্যান্ডিং, ফ্যাকাল্টি প্রোফাইল উন্নয়ন, স্টুডেন্ট এনগেজমেন্ট কনটেন্ট, ডিজিটাল ক্যাম্পেইন এবং স্ট্র্যাটেজিক মার্কেটিং—সব মিলিয়ে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পূর্ণাঙ্গ ব্র্যান্ড পরিচিতি গড়ে তোলার কাজ।
এজেন্সিটি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে কাজ করেছে পশ্চিমা বিশ্বের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গেও, যেখানে শিক্ষার্থীদের আকর্ষণ, গ্লোবাল র্যাঙ্কিং, স্টোরিটেলিং, এবং ইনস্টিটিউশনাল ভ্যালু তুলে ধরার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর দৃশ্যমানতা বাড়ানোই ছিল মূল লক্ষ্য।
যদিও Switch X-এর কাজ শিক্ষা খাতকে ঘিরে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ, তবুও তারা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাতেও সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। এর মধ্যে রয়েছে টেক কোম্পানি, স্টার্টআপ, হসপিটালিটি, রিয়েল এস্টেট, টেলিকম, কিডস ও লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড—যেখানে প্রতিটি ক্লায়েন্টের জন্য কাস্টমাইজড কনটেন্ট ও স্ট্র্যাটেজি নির্মাণ করা হয়।
“গল্প বলাটাই ব্র্যান্ডিংয়ের মানবিক দিক”
আসিফ আদনান আরও বলেন,
“প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আলাদা একটি গল্প থাকে। আমার কাজ হলো সেই গল্পটি খুঁজে বের করা, এবং সেটিকে এমনভাবে উপস্থাপন করা, যাতে তা অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মনে সোজাসুজি পৌঁছে যায়। গল্প বলাটাই আজকের ব্র্যান্ডিংয়ের সবচেয়ে মানবিক দিক।”
Switch X-এর PR Director হিসেবে আছেন দীপ্তি চৌধুরী—একজন পরিচিত গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও সমাজকর্মী। বিশ্বব্যাপী শিশুদের পুষ্টি, শিক্ষা ও মানসিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে কাজ করার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে তিনি মনে করেন, শিক্ষা খাতে ব্র্যান্ডিং নিছক প্রচারণা নয়, এটি ভবিষ্যৎ গঠনের অংশ।
তিনি বলেন,
“আমি শিশুদের নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করেছি—তাদের শেখার ধরণ, পরিবেশ এবং বিকাশ নিয়ে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে কাজ মানে আমার কাছে কেবল একটি ইনস্টিটিউশনের প্রচার নয়, বরং একটি প্রজন্মের ভবিষ্যৎ গঠনে অংশগ্রহণ। এই জায়গাটা আমার জন্য অনেক ব্যক্তিগত।”
Switch X-এর Strategy Director প্রসাদ সাহা মনে করেন, শিক্ষা এখন আর আলাদা কোনো জগৎ নয়—এটিও একটি প্রতিযোগিতামূলক সেক্টর হয়ে উঠেছে। এখানে ভালো ফলাফলের পাশাপাশি ভালোভাবে নিজেকে তুলে ধরতে না পারলে পিছিয়ে পড়ার ঝুঁকি থেকে যায়।
তার ভাষায়,
“আগে আমরা ভাবতাম শুধু প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের ব্র্যান্ডিং দরকার। এখন দেখতে পাচ্ছি—স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়—সবাই একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে যেখানে পরিচয়, ভাবমূর্তি আর মানুষের আস্থা তৈরি করাটাই বড় শক্তি।”
Switch X-এর Growth & Partnership Director আফতাবুজ্জামান ত্রিদিব, গত চার বছর ধরে শিশু-কেন্দ্রিক ব্র্যান্ড Keedlee-এর সঙ্গে কাজ করেছেন, যেখানে তিনি শিশুদের লাইফস্টাইল, শিক্ষা ও মনস্তত্ত্ব নিয়ে কাজ করেছেন।
তিনি বলেন,
“Keedlee-তে কাজ করার সময় আমি শিশুদের চিন্তা, অনুভব ও শেখার ধরন সম্পর্কে গভীরভাবে জানতে পেরেছি। এখন Switch X-এর মাধ্যমে গ্লোবাল স্কুল ও ইউনিভার্সিটির সঙ্গে কাজ করতে পারছি—এটা শুধু পেশাগতভাবে নয়, ব্যক্তিগতভাবে আমার জন্যও ভীষণ exciting।”
Head of Client Relations রাকিব হাসান ইমন বলেন,
“প্রতিটি স্কুলই ভালো কিছু করতে চায়, কিন্তু তারা তাদের কথা ঠিকভাবে বলতে পারে না। আমাদের কাছে কাজটা শুধু ক্যাম্পেইন না—আমরা প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের আলাদা দিকটা খুঁজে বের করে সেটাকে এমনভাবে তুলে ধরি যাতে মানুষ সেটার সঙ্গে সহজে কানেক্ট করতে পারে। এই কাজটাই আমাদের আলাদা করে দিচ্ছে।”
Switch X তার শুরু থেকেই প্রমাণ করে চলেছে—ব্র্যান্ডিং মানে শুধু মার্কেটিং নয়, বরং উদ্দেশ্য, সৎ চিন্তা এবং কৌশলের সঠিক প্রয়োগ। এই এজেন্সি যেকোনো ক্লায়েন্ট বা খাতের সঙ্গে কাজ করে না; বরং তাদের নিজস্ব নীতিমালা ও পেশাদার মাপকাঠি অনুসরণ করেই সিদ্ধান্ত নেয় কোথায় কাজ করবে এবং কোথায় নয়।
Switch X কাজ করছে ব্র্যান্ড স্ট্র্যাটেজি, ডিজিটাল মার্কেটিং, কনটেন্ট প্রোডাকশন, ক্যাম্পেইন ডিজাইন, ভিডিও প্রেজেন্টেশন, সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট, রিব্র্যান্ডিং, ও মার্কেট এক্সপানশন–এর মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে। তারা পারদর্শীভাবে কাজ করছে টেক, হসপিটালিটি, স্টার্টআপ, রিয়েল এস্টেট, টেলিকম, লাইফস্টাইল, কিডস এবং শিক্ষা খাতের বহু প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে—দেশীয় ও বৈশ্বিক উভয় পর্যায়ে।
তবে এজেন্সিটি একটি খাতে কাজ না করার বিষয়ে স্পষ্টভাবে অবস্থান নিয়েছে।
Strategy Director, প্রসাদ সাহা বলেন,
“Switch X ইচ্ছাকৃতভাবেই রেস্টুরেন্ট খাত থেকে নিজেকে দূরে রাখে। আমাদের কাছে প্রতিটি খাতের প্রতি আগ্রহ থাকা জরুরি—আর ফুড সেক্টরটি আমাদের কাছে খুব একটা আকর্ষণীয় নয়। আমরা এমন প্রজেক্টে সময় ও চিন্তা দিতে চাই, যেখানে আমাদের মনযোগ ও কল্পনার জায়গা থাকে। হ্যাঁ, ব্যতিক্রম হিসেবে যদি এটি হয় কোনো আন্তর্জাতিক ফুড চেইন বা ব্র্যান্ড, যাদের সঙ্গে কাজ করে সত্যিকারের গল্প বলা যায়—তাহলেই কেবল বিবেচনায় আসতে পারে। নইলে, আমাদের কাজ করার প্রধান শর্তই হলো ‘আমরা আগ্রহী কি না’। কারণ শুধু টাকার জন্য আমরা কোনো কিছুতে হাত দিই না।”
Switch X এখন আন্তর্জাতিক পরিসরে তাদের উপস্থিতি আরও দৃঢ় করার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। ২০২৭ সালের মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ অফিস চালুর পরিকল্পনা রয়েছে, যার মাধ্যমে তারা মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে প্রবেশের পাশাপাশি, গ্লোবাল ক্লায়েন্টদের সঙ্গে আরও সরাসরি ও সক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারবে।
এই ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা শুধু ব্যবসার সম্প্রসারণ নয়—এটি Switch X-এর আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ভিশনের অংশ, যা একটি স্থানীয় এজেন্সিকে একটি Global Marketing Agency তে রূপান্তরের পথে এগিয়ে নিচ্ছে। এজেন্সির প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও আসিফ আদনান তার শেষ বক্তব্যে বলেন,
“আমরা সবার সঙ্গে কাজ করি না—শুধু ক্লায়েন্ট নয়, টিম মেম্বার নির্বাচনেও আমাদের নীতিমালা রয়েছে। আমরা দেখেই নিই, আমাদের মূল্যবোধ, ভিশন ও ইন্টিগ্রিটির সঙ্গে তারা সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না। আমরা একেবারেই অর্থ-কেন্দ্রিক নই। আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো—ক্লায়েন্টের খাতে আমরা আদৌ নতুন কিছু ভাবতে পারছি কি না, এবং সেই খাতটা আমরা সত্যিই বুঝতে পারছি কি না। যখন সেই জায়গাগুলো ক্লিয়ার হয়, তখনই আমরা ক্লায়েন্ট অনবোর্ড করি।”
Switch X আজ শুধু একটি এজেন্সি নয়—এটি একটি চিন্তাশীল প্ল্যাটফর্ম, যারা বিশ্বাস করে, "ব্র্যান্ড মানেই শুধু পণ্য নয়, এটি মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করার মাধ্যম।"
তাদের লক্ষ্য একটাই—ভিন্নভাবে ভাবা, বিশ্লেষণ করা এবং এমন কিছু তৈরি করা, যা শুধু চোখে পড়ার মতো নয়, মনে থাকার মতোও।
We are not gonna make spamming
© 2025 Academic Diary. All Rights Reserved.
BACK TO TOP