বিদ্যালয় বার্তা

ছাত্রীকে যৌন হয়রানির দায়ে ভিকারুননিসার শিক্ষক বরখাস্ত

ছাত্রীকে যৌন হয়রানির দায়ে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখার ইংরেজির শিক্ষক আবু সুফিয়ানকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ।

বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে ভিকারুননিসা নূন স্কুলের গভর্নিং বডির জরুরি সভায় ওই শিক্ষককে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) থেকে তার সাময়িক বহিষ্কারাদেশ কার্যকর হবে।

বুধবার রাত ১০টার দিকে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, স্কুলের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের সভাপতিত্বে জরুরি সভায় অভিযুক্ত শিক্ষক আবু সুফিয়ানকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ সভায় অভিভাবক প্রতিনিধি ও শিক্ষক প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন

জানা গেছে, গত ২৯ আগস্ট ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসন্ধুরা (দিবা) শাখার নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর বাবা ইংরেজির শিক্ষক আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।

লিখিত অভিযোগে ছাত্রীর বাবা উল্লেখ করেন, আমার মেয়ে ভিকারুননিসা স্কুলের বসুন্ধরা শাখার নবম শ্রেণির দিবা শাখার ছাত্রী। ওই শাখার ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক আবু সুফিয়ানের কাছে সে প্রাইভেট পড়তো। প্রাইভেট পড়ানোর ফাঁকে ওই শিক্ষক বিভিন্ন সময় আমার মেয়েকে অশালীন এসএমএস পাঠিয়েছে। যেগুলো খুবই আপত্তিকর ও সম্মানহানিকর। একজন শিক্ষকের কাছ থেকে এমন আচরণ আশা করা যায় না। আমি এ ঘটনার প্রতিকার চাই।

পরে ৩০ আগস্ট বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের শিক্ষা ও আইসিটি শাখার সহকারী কমিশনার আল-আমিন হালদারকে অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। অভিযোগ তদন্তে গত ২ সেপ্টেম্বর স্কুলে গিয়ে শুনানি করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

ওইদিন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী, ওই ছাত্রীর মা, আরও কয়েকজন অভিভাবক উপস্থিত ছিলেন। তাদের উপস্থিতিতে শাখাপ্রধান জগদীশ চন্দ্র পালসহ ২৭ জন শিক্ষক একটি লিখিত রেজ্যুলেশন দেন।

তাতে বলা হয়, ‘নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর অভিভাবকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অধ্যক্ষ, শাখাপ্রধান ও অভিভাবকের সামনে আমরা জানাচ্ছি যে, ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক আবু সুফিয়ানের সঙ্গে আমরা কাজ করতে চাই না।’

এদিকে, অভিযোগ ওঠার পর শিক্ষক আবু সুফিয়ানকে অধ্যক্ষ কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়। তদন্ত শেষ হলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছিল।

অভিযুক্ত শিক্ষক আবু সুফিয়ানের দাবি শাখাপ্রধানের সঙ্গে মতবিরোধের কারণে তাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে।

গত ৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘দুই-তিন বছর আগে একটি বিষয় নিয়ে মতবিরোধ থেকে শাখাপ্রধান আমার পেছনে লেগে আছেন। তিনি আমাকে সরাতে চান। একবার আমাকে বদলি করা হয়েছিল। তখন ছাত্রীরাই আমার জন্য আন্দোলন করেছিল। পরে আমার বদলির আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছিল। তখন আমাকে সরাতে পারেননি। পূর্ব রেষারেষির জেরে এবার ষড়যন্ত্রের ফাঁদ বানানো হয়েছে।’

২০১১ সালে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাংলার শিক্ষক পরিমল জয়ধরের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া শেষে ২০১৫ সালে আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *