দীর্ঘকাল ধরে এই ভূখন্ডে বাঙালীদের পাশাপাশি বসবাস করে আসছে নানা ধরনের প্রাচীন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী। কিন্তুু বিভিন্ন কারনে অবকাঠামো, আর্থসামাজিক এবং শিক্ষা ও সংস্কৃতির দিক থেকে তারা এখনো রয়েছে কিছুটা পিছিয়ে । এরকম পিছিয়ে পড়া নৃ-গোষ্ঠীর শিশুদের মেধা মনন বিকাশে কাজ করছে লাইটশোর ফাউন্ডেশন।
সম্প্রতি রাজধানী ঢাকাতে ইএমকে সেন্টার ও লাইটশোর ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যাগে বাংলাদেশের প্রাচীন দুটি নৃ-গোষ্ঠী গারো ও হাজং বাচ্চাদের আঁকা ১০০ টি ছবি নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। বুধবার(১ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টা প্রদর্শনীটির সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
প্রদর্শনী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইউ ওয়াই সিস্টেমের ফারহানা এ রাহমান, জেসিআই ঢাকা ফাউন্ডারসের এম আসিফ রাহমান, ইউএনডিপির হেড অব কমিউনিকেশন আবদুল কাইয়্যুম।
ইউএনডিপির হেড অব কমিউনিকেশন আবদুল কাইয়্যুম বলেন, ‘এ ধরনের উদ্যোগ পিছিয়ে পড়া শিশুদের সৃজনশীলতা বাড়াবে, পাশাপাশি তাদের আরও আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে। এই শিশুদের মূলধারার শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত করতে হলে আমাদের সবার সম্মিলিত প্রয়াস দরকার।’
জেসিআই ফাউন্ডারসের লোকাল প্রেসিডেন্ট এম আসিফ রহমান বলেন, ‘সুবিধাবঞ্চিত এই শিশুগুলো যারা আগে কখনো ক্রেয়ন হাতে নেয়নি, তারা এত সুন্দর পেইন্ট করে, নিজের চোখে না দেখলে হয়তো বিশ্বাস করতাম না। আমি এখানে কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই লাইটশোরকে, বাচ্চাদের মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য এত সুন্দর ইভেন্ট অর্গানাইজ করেছে। লাইটশোর ফাউন্ডেশন শুধু একটা আর্ট ক্যাম্প প্রদর্শনীই নয়, বাচ্চাদের জন্য একটা স্কুল করার স্বপ্ন দেখেছে এবং সেটা বাচ্চাদের নিজেদের টাকায়, এটা বাংলাদেশের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে।
প্রদর্শনীর উদ্যোক্তা সুলতানা রাজিয়া জানান, এ আর্ট ক্যাম্প আয়োজন করতে গিয়ে অনেক ভিন্নধর্মী অভিজ্ঞতা ছিল, যেমন এই শিশুরা তাদের মেধা দিয়ে প্রমাণ করল যে সব জায়গায় প্রতিভা ছড়িয়ে আছে। কিন্তু সুযোগ নেই বলে প্রতিভা বিকশিত হচ্ছে না। আমরা আশা করছি, এ প্রদর্শনী আয়োজনের মধ্য দিয়ে তাদের আঁকা ছবিগুলো বিশ্বদরবারে তুলে ধরার পাশাপাশি তাদের জন্য এ রকম আরও ভিন্নধর্মী আয়োজন করব ভবিষ্যতে।’
প্রদর্শনীটি ঘুরে দেখে লিডবার্গ এডুকেশনের প্রধান নির্বাহী রাকিব হাসান শিশুদের আঁকা ছবির প্রশংসা করে বলেন, ‘শিশুদের আঁকা ছবিগুলোর মাধ্যমে তারা তাদের স্বকীয় বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে তুলেছে। নিষ্প্রাণ ক্যানভাসে আঁকা ছবিগুলোতে শিশুদের হাতের ছোঁয়ায় যেন প্রানের সঞ্চার ঘটেছে। প্রত্যেকটি ছবি মনে করিয়ে দেয় আমাদের শৈশবের আঁকিবুকি। ‘
এরকম ব্যাতিক্রমী একটি উদ্যোগ গ্রহন করায় প্রদর্শনীর উদ্যোক্তা সুলতানা রাজিয়ার ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তিনি। পাশাপাশি লাইটশোর ফাউন্ডেশন নিয়েও কথা হয় দুজনের মধ্যে। এধরনের কাজের গুরুত্বারোপ করে রাকিব হাসান বলেন, ‘ ভবিষ্যতে এই ধরনের উদ্যোগের অংশীদার হতে পারলে লিডবার্গ এডুকেশন প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেদের গর্বিত বলে মনে করবে। ‘