প্রথম ভারতীয় হিসেবে তিনটি গ্র্যামি জিতেছেন রিকি কেজ। ২০১৫ সালে “উইন্ডস অফ সামসারা” অ্যালবামের জন্য কেজ তার প্রথম গ্র্যামি জেতেন। সে বছর সবচেয়ে কম বয়সি ভারতীয় হিসেবে গ্র্যামি জিতেছিলেন তিনি।
সাত বছর পর “ডিভাইন টাইডস” অ্যালবামের জন্য কেজ তার দ্বিতীয় ও তৃতীয় গ্র্যামি জিতলেন। ব্রিটিশ ব্যান্ড “দু পুলিশের” ড্রামার স্টুয়ার্ট কোপল্যান্ডের সঙ্গে অ্যালবামটি করেছেন কেজ। এটি ২০২২ সালের সেরা “নিউ এজ অ্যালবাম” ও সেরা “ইমারসিভ অডিও অ্যালবামের” খেতাব জেতে। ক্রিস্টিনা অ্যাগিলেরা এবং দ্য চেইনস্মোকার্সের মতো হেভিওয়েট প্রতিযোগীর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হয় তাদের।
আন্তর্জাতিক সংগীত মহলে পরিচিতি পেলেও কেজ তার নিজ দেশ ভারতে তেমন পরিচিতি পাননি। ভারতে এমন অনেকে আছেন যারা গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড জেতার আগে কেজের নাম শোনেননি। বিট্রিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
কেজের ভাষ্যমতে, ভারতীয়দের চেয়ে পশ্চিমারা তার মিউজিক বেশি শোনেন। তবে শেষ কয়েক বছরে এই ধারার পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
“গত বছর আমি ভারতজুড়ে ৪০টি কনসার্ট করেছি। স্টেডিয়ামগুলো জনাকীর্ণ ছিল। অনেকগুলো মিউজিক ফেস্টিভালে আমাকে প্রধান আকর্ষণ হিসেবে রাখা হয়েছিল। ভারত আমাকে গ্রহণ করতে শুরু করেছে। তবে তৃতীয় গ্র্যামির ফলে মনে হয় আরও কিছু ভারতীয় শ্রোতা পেয়েছি।”
ভারতীয় মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে বলিউডের দাপটের কারণে কেজ তেমন জনপ্রিয়তা পাননি বলে মনে করেন। তিনি বলেন, “আমার ক্যারিয়ার মূলত বাইরের দেশগুলোর অডিয়েন্সকে কেন্দ্র করে সাজানো। এ জন্য ভারতে তেমন পরিচিতি না পেলেও আমার সফলতার পেছনে এই কারণটিও বড় প্রভাব রেখেছে।”
যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনায় জন্ম গ্রহণ করেন কেজ। পরে আট বছর বয়সে ফেরেন নিজ ব্যাঙ্গালোরেতে। সেখানেই বড় হন তিনি। পড়ালেখা করেছেন দন্ত চিকিৎসাবিদ্যা নিয়ে। নিয়েছেন ডিগ্রি। তবে, পেশা হিসেবে মিউজিককেই বেছে নিয়েছেন তিনি।
কেজ জানান, যখন তার বন্ধুরা ভিডিও গেম খেলতেন তখন তিনি গানের রেকর্ড শুনতেন। এ বিষয়ে পড়ালেখা করে জানার চেষ্টা করতেন- ওই রেকর্ডগুলো কার বা এতে কোন ধরনের বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
২০ বছর বয়সেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন সংগীতকেই পেশা হিসেবে বেছে নেবেন। এখন তার বয়স ৪১। প্রায় দুই দশক পার হয়েছে এই সিদ্ধান্তের। পরিবার প্রথম প্রথম এই সিদ্ধান্তে আপত্তি জানালেও কেজ তার সিদ্ধান্তে অটল থাকেন।
কেজের কাজগুলো মূলত অ্যাম্বিয়েন্ট মিউজিক “জঁরার” অন্তর্গত। কেজ তার কাজগুলোকে সমাজের সমস্যাকে তুলে ধরার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেন। তার মতে, “আমি যে মিউজিকগুলো তৈরি করি তার সবগুলোই পরিবেশ রক্ষা, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও শরণার্থী সমস্যা, ভূমি অবক্ষয়, যুদ্ধ, প্রাণী সংরক্ষণের মতো সামাজিক সমস্যাগুলো সম্পর্কে সচেতনতার উদ্দেশ্যে তৈরি।”
কেজের কাছে মিউজিক ব্যক্তিগত আবেগের বিষয়। তিনি তার মিউজিকের মাধ্যমে পৃথিবীকে আরও সুন্দর করে তুলতে চান।