বিশ্ব বিদ্যালয় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সর্বশেষ স্বায়ত্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়

একক ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থী – অভিভাবকদের মধ্যে ধোঁয়াশা

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা ঘিরে প্রতি বছরই ভোগান্তিতে পড়েন শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা। জেলায় জেলায় পরীক্ষা দিতে গিয়ে যেমন খরচ হয়, তেমনই হয় ভোগান্তি। এ পরিস্থিতির সমাধানে কয়েক বছর ধরেই তৎপর সরকার। এ নিয়ে নানান উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা যায়নি। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে চালু করা হয় গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতি। তাতে আসেনি স্বায়ত্তশাসিত চারটি বিশ্ববিদ্যালয়। আবার গুচ্ছ পদ্ধতি চালু হলেও ‘মান-মর্যাদার’ অজুহাতে সে বলয়ের বাইরে থেকে গেছে বাংলাদেশে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)।

এবার স্বায়ত্তশাসন ও আভিজাত্যের ইতি ঘটছে। চালু হচ্ছে ‘একক ভর্তি পরীক্ষা’। এক কাতারে আসছে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এতে ভর্তিচ্ছুরা একটি পরীক্ষায় অংশ নিলেই মেধার ভিত্তিতে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবেন। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে একক এ ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করতে চায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

ইউজিসি বলছে, দেশে বর্তমানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫৬টি। এরমধ্যে একাডেমিক কার্যক্রম চালু রয়েছে ৫৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে পৃথকভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হলে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের যেমন চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়, তেমনি রাষ্ট্রীয় খরচও বাড়ে। ‘বিশৃঙ্খল’ এ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে ন্যাশনাল টেস্টিং অথরিটি (এনটিএ) করা হবে। তবে এনটিএ বাস্তবায়ন সময়সাপেক্ষ হওয়ায় আপাতত ‘একক ভর্তি পরীক্ষা’ কাঠামো তৈরি করছে ইউজিসি। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য রাষ্ট্রপতি। পদাধিকার বলে তিনি অধ্যাদেশ জারি করলেই সব বিশ্ববিদ্যালয় এক কাতারে আসতে বাধ্য। সে পথেই হাঁটছে সংস্থাটি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি সূত্র জানায়, সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ভোগান্তি কমাতে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একসঙ্গে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে অভিপ্রায় প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রপতির অভিপ্রায় অনুযায়ী, একক ভর্তি পরীক্ষা নিতে প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ইউজিসিকে বিষয়টি নিয়ে কাজ করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়। এরপর ‘একক ভর্তি পরীক্ষা’ কীভাবে নেওয়া সম্ভব, তা ঠিক করতে ১৫ সদস্যের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি করে ইউজিসি। কমিটি একটি কাঠামো দাঁড় করিয়ে তা অধ্যাদেশ আকারে জারির জন্য সুপারিশ করবে। অধ্যাদেশে থাকবে ন্যাশনাল টেস্টিং অথরিটি গঠনের সুস্পষ্ট নির্দেশনাও।

একক ভর্তি পরীক্ষা হতে পারে যেভাবে

একবার পরীক্ষা দিলেই সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়াকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন সবাই। একই সঙ্গে ভর্তি পরীক্ষা কীভাবে হবে, পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগ পাওয়ার প্রক্রিয়া নিয়েও অন্ধকারে শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা। খোদ ইউজিসির গঠিত ১৫ সদস্যের কমিটিও এ ব্যাপারে এখনো স্পষ্ট ধারণা দাঁড় করতে পারেনি। আগামী ২৬ অক্টোবর কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে জানিয়েছেন ইউজিসি সচিব ও একক ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি প্রণয়ন কমিটির সদস্য সচিব ড. ফেরদৌস জামান।

ইউজিসি সচিবের ভাষ্যমতে, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে একক ভর্তি পরীক্ষা নিতে ইউজিসি আন্তরিক। অধ্যাদেশ জারি হলে সেটি সম্ভব। এরমধ্যে আমরা কাঠামো দাঁড় করাবো। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও নিজেদের মধ্যে আলোচনা করবে। তারপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *