ধর্ম লাইফস্টাইল সর্বশেষ

ইনসুলিন নিলে রোজা ভাঙ্গবে কি, জেনে নিন এখনই

রোজা রাখা আল্লাহর নির্দেশ। কিন্তু অসুস্থতার কারণে মাংসপেশীতে কিংবা চামড়ার নিচে ইনসুলিন বা টিকা জাতীয় ইনজেকশন নিতে হয়। যাদের কেউ কেউ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত আবার কেউ ভাইরাস কিংবা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়। এসব রোগীদের করণীয় কী? তারা কি মাংসপেশী কিংবা চামড়ার নিচে ইনসুলিন-টিকা জাতীয় ইনজেকশন নিতে পারবে? এ সম্পর্কে ইসলাম কি বলে?

‘হ্যাঁ’ প্রয়োজনে মাংসপেশী কিংবা চামড়ার নিচে ইনসুলিন ও টিকা নেয়া যাবে। নিয়মিত রোগের কারণে ইনসুলিন, ইনজেকশন, টিকা কিংবা স্যালাইন গ্রহণে ইসলামি আইন শাস্ত্রের সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত হলো-

‘প্রয়োজনের তাগিদে যে কোনো ধরনের ইনজেকশন বা টিকা নিলে রোজা নষ্ট হবে না। চাই তা শিরায় দেওয়া হোক কিংবা চামড়ার নিচে, মাংসে, বা পেটে। যেমন-

– কুকুরে কামড় দিলে নিয়মিত নির্দিষ্ট সংখ্যক ইনজেকশন নিতে হয়।

– ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত ইনসুলিন নিতে হয়।

– হার্টের রোগীদের পেটে কিংবা চামড়ার নিচে ইনজেকশন নিতে হয়।

– ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আগে কিংবা পরে টিকা নিতে হয়।

– প্রয়োজনে সালাইনও গ্রহণ করতে হয়।

অধিকাংশ ইসলামিক স্কলারের মতে এটা সুস্পষ্ট যে- এতে তাদের রোজা ভাঙবে না। প্রয়োজনের তাগিদে ইনসুলিন ও টিকা ও স্যালাইন গ্রহণ করা যাবে।

বিশ্ববিখ্যাত ইসলামিক স্কলারদের গবেষণা ও ফতোয়া আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণার সম্বন্বয়ে এটা প্রমাণিত। তাই নির্ধারিত ক্ষেত্রে ইনসুলিন, ইনজেকশন, টিকা কিংবা অসুস্থতায় স্যালাইন গ্রহণ করলে রোজা ভাঙবে না।

গবেষণায় রোজা না ভাঙার কারণ হিসেবে যা উল্লেখ করা হয়েছে তাহলো-

ইনজেকশনের মাধ্যমে যেসব ওষুধ শরীরে প্রবেশ করনো হয়, তা রোজা ভেঙে যাওয়ার জন্য যে শর্ত রয়েছে এসব ইনজেকশন তার আওতায় পড়ে না। কেননা রোজা ভেঙে যাওয়ার জন্য যে খাদ্যনালী বা মস্তিষ্কের রাস্তা পথ কিংবা যে গ্রহণযোগ্য রাস্তা রয়েছে তা দিয়ে ইনজেকশন, ইনসুলিন, স্যালাইন কিংবা টিকা ইত্যাদি প্রবেশ করানো হয় না।

রোজা ভাঙার অন্যতম কারণ হলো- খাদ্যনালী দিয়ে খাবার পেটে যাওয়া। কিন্তু এসব ইনজেকশন ও টিকা শরীরের ভেতর প্রবেশ করলেও তা খাদ্যনালী দিয়ে পেটে যায় না। যদিও পেটে যায় তা আবার সেটা খাদ্যনালী দিয়ে যায় না, বরং অন্য শিরা দিয়ে তা শরীরে প্রবেশ করে। তাই ইনজেকশন জাতীয় চিকিৎসা গ্রহণের দ্বারা রোজা ভাঙবে না।

তবে উদ্দেশ্য যদি এমন হয়-

রোজার কষ্ট কমানোর  নিয়তে শরীরে স্যালাইন গ্রহণ করবে; তবে তাদের রোজা মাকরূহ হয়ে যাবে। সুতরাং এ মানসিকতা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।

আবার এমনটিও যেন না হয় যে

ডায়াবেটিস কিংবা ইনজেকশন নিতে হয় বলে রোজা রাখা যাবে না। এ অজুহাতে রোজা থেকে বিরত থাকার কোনো সুযোগ নেই।

মনে রাখতে হবে

আল্লাহর ফরজ বিধান। এ বিধান পালনে মহান আল্লাহ অনেক সহজ বিধান দিয়েছেন। যেমন মহান আল্লাহ ঘোষণা দিয়েছেন এভাবে-

‘কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবেসে এ মাসের রোজা রাখবে। আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে সে অন্য দিনে গণনা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চানতোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না যাতে তোমরা গণনা পূরণ কর এবং তোমাদের হেদায়েত দান করার দরুন আল্লাহ তাআলার মহত্ত্ব বর্ণনা করযাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৫)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রোজার যথাযথ হক আদায় করে তা পালনের তাওফিক দান করুন। রোজার বরকতের  অসুস্থদের সুস্থ করে দিন। আমিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *