আন্তর্জাতিক সর্বশেষ

নেপালে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৫০ জন

নেপালে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা দেড়শ ছাড়িয়েছে। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৪০০ মানুষ। শুক্রবার (৩ নভেম্বর) রাতে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে আঘাত হানে ৬ দশমিক ৪ মাত্রার ওই ভূমিকম্প। এতে প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে জাজারকোট ও পশ্চিম রুকুম জেলা।

নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু ছাড়াও প্রবল এই কম্পন অনুভূত হয়েছে প্রতিবেশী ভারতের বিভিন্ন শহরেও।

নেপাল সরকার জানিয়েছে, ভূমিকম্পের আঘাতে অন্তত ৩৭৫ জন আহত হয়েছেন। তাদের জাজারকোট হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কয়েকজনকে আকাশপথে কাঠমান্ডুতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

সেদিনের ভূমিকম্পে কোনোমতে প্রাণে বেঁচে গেছেন গীতাকুমারি বিস্তা ও তার বড় মেয়ে। তবে ছোট মেয়েকে হারিয়েছেন তিনি।

গীতাকুমারি বলেন, ওপরের তলায় আমরা একই ঘরে ছিলাম। সবকিছুই আচমকা ঘটে যায়। আমরা বুঝতে পারছিলাম না কী হচ্ছে।

হঠাৎ বাড়িটি ধসে পড়লে তারা সবাই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েন। গীতাকুমারি বলেন, চারপাশের মানুষজন চিৎকার করছিল। একপর্যায়ে আর্মড পুলিশ আসলে আমি চিৎকার করি, আমিও বেঁচে আছি… তারা প্রথমে আমার বড় বেড়ে উদ্ধার করে নিচতলায় নিয়ে যায়। দুর্ভাগ্যবশত তারা আমার ছোট মেয়েকে বাঁচাতে পারেনি। তার বয়স ছিল ১৪ বছর।

শুক্রবার ৬ দশমিক ৪ মাত্রার শক্তিশালী ওই ভূমিকম্পের এক ঘণ্টার মধ্যে আরও কয়েকবার কেঁপে ওঠে এলাকাটি। আফটারশকের আশঙ্কায় পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত মানুষজনকে বাইরেই থাকার পরামর্শ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল গত শনিবার ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চল পরিদর্শন করেছেন। ভূমিকম্পে জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতিতে গভীর দুঃখপ্রকাশ করেছেন তিনি। দুর্গত এলাকাগুলোতে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম দ্রুত শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চীন-ভারতসহ বিভিন্ন দেশ নেপালের ভূমিকম্প দুর্গতদের সহায়তা করতে চেয়েছে। বিদেশি এসব সহায়তা নেওয়া হবে কি না সে বিষয়ে রোববার নেপালি মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা রয়েছে।

নেপালে শক্তিশালী ভূমিকম্পের ঘটনা নতুন নয়। তিব্বতীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটের মিলিত স্থানের ওপর অবস্থিত হওয়ায় এটি অত্যন্ত ভূমিকম্পপ্রবণ।

নেপাল সরকারের দুর্যোগ পরবর্তী চাহিদা মূল্যায়ন (পিডিএনএ) রিপোর্ট অনুসারে, এটি বিশ্বের ১১তম ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ।

২০১৫ সালে নেপালে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার এক ভয়াবহ ভূমিকম্প ও তার পরের আফটারশকগুলোর আঘাতে প্রায় নয় হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *