আন্তর্জাতিক

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় ১০০ সাংবাদিক নিহত

গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর নির্বিচার হামলা শুরুর পর এ পর্যন্ত অন্তত ১০০ সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার ইসরায়েলি বিমান হামলায় ফিলিস্তিনি সাংবাদিক মুহাম্মাদ আবু হায়েদি গাজা শহরের পূর্বে তার বাড়িতে নিহত হওয়ার পর এই তথ্য জানিয়েছে গাজার সরকারি জনসংযোগ বিভাগ।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর দিয়েছে। গাজার সরকারি জনসংযোগ বিভাগ সামাজিক প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামে এক বিবৃতিতে বলেছে, শুজাইয়া এলাকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় সাংবাদিক মোহাম্মদ আবু হায়েদি শহীদ হওয়ার পর গাজা উপত্যকায় নৃশংস যুদ্ধে নারী ও পুরুষ মিলিয়ে নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা ১০০ জনে দাঁড়িয়েছে।

তবে নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা আরও বেশিও হতে পারে বলে জানিয়েছে গাজার কর্মকর্তারা। সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করা সংস্থা কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টের একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, আল জাজিরা আরবির ক্যামেরাম্যান সামের আবুদাকা সহ অন্তত ৬৯ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৫০ টিরও বেশি গণমাধ্যম কার্যালয় সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। শত শত ফিলিস্তিনি সাংবাদিক ও তাদের পরিবারকে জোরপূর্বক গাজার দক্ষিণে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে।

ঘন ঘন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার মধ্যে কঠিন পরিস্থিতিতে জীবনযাপনের সঙ্গে যুদ্ধের খবর নিয়ে প্রতিবেদন করতে হচ্ছে গণমাধ্যম কর্মীদের। তবে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় উত্তরাংশের অফিসগুলোতে খবর সংগ্রহের সরঞ্জাম ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন গণমাধ্যম কর্মীরা।

সশস্ত্র সংঘাতের এলাকায় কর্মরত সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিতের জন্য রয়েছে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন। তবে সেই আইন বারবার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে ইসরায়েলের ওপর। ফিলিস্তিনি সাংবাদিকেরা বলেছেন, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে যাতে তারা চুপ হয়ে যায়।

ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব জার্নালিস্টের ডেপুটি জেনারেল সেক্রেটারি টিম ডসন আল জাজিরাকে বলেন, এত বেশি পরিমাণে সাংবাদিকদের হত্যা উপেক্ষা করা অসম্ভব হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, ‘এর আগে কোনো সংঘর্ষে এত বেশি সংখ্যক সাংবাদিকের মৃত্যু দেখেছি কিনা আমি মনে করতে পারি না। সংঘাতের শুরুতে গাজায় প্রায় ১ হাজার সাংবাদিক ছিলেন। ঠিক কতজন সাংবাদিক এই কদিনে মারা গেছেন তার সঠিক সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে। তবে মোট সংখ্যার সাড়ে সাত থেকে দশ শতাংশ সাংবাদিকও যদি নিহত হন সেটাও অনেক বড় সংখ্যা।’

ডসন বলেন, গাজার সাংবাদিকদের কাছে এখন কেবল শুধু ক্যামেরা, মাইক্রোফোন এবং নোটবুক আছে। সাংবাদিকদের নিহতের সংখ্যা অনেক বেশি হওয়া সত্ত্বেও তারা তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

ফিলিস্তিনের সাংবাদিক এবং তাদের পরিবার ইসরায়েলি বাহিনীর কাছ থেকে বেশ কয়েকবার হুমকি পেয়েছে বলে জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *