বিদেশ শিক্ষা সর্বশেষ

এখন থেকে বিদেশী শিক্ষার্থীরা পরিবার নিয়ে যেতে পারবে না যুক্তরাজ্যে

বৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে বিদেশি শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্যদের আনার ওপর যে বিধিনিষেধ জারি করেছিল যুক্তরাজ্যের সরকার, তা গত ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া শুরু হয়েছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করা হয়েছে এ তথ্য।

১ জানুয়ারি ইস্যু করা সেই বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি বলেছেন, ‘যুক্তরাজ্যে আগত বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজেদের পরিবারের সদস্যদের এ দেশে আনার যে অন্যায্য প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছিল, তা বন্ধে সরকারের গৃহীত নীতির বাস্তবায়ন শুরু হল আজ থেকে।’

‘আমরা আশা করছি, সরকারি নীতি বাস্তবায়নের এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে এ বছর আমরা অন্তত ৩ লাখ মানুষ, যারা স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য যুক্তরাজ্যে আসার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন— তাদের ঠেকাতে পারব।’

প্রসঙ্গত, যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গ্র্যাজুয়েশন বা স্নাতক কোর্সে অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থীদের নিজেদের পরিবারের সদস্যদের দেশটিতে আনুমতি ছিল; কিন্তু এই অনুমতির সুযোগ নিয়ে ভারতীয় উপমহাদেশ, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষের আগমন ঘটতে থাকে দেশটিতে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে প্রতি বছর গড়ে ১ লাখ ৪০ হাজার অভিবাসীর আগমন ঘটে। এই অভিবাসীদের একটি বড় অংশই আসেন দেশটিতে অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্য পরিচয়ের ভিত্তিতে।

২০২৩ সালে রেকর্ড ৭ লাখ ভিসা ইস্যু করেছে যুক্তরাজ্যের সরকার, এসব ভিসার মধ্যে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৭৮৮টি ভিসা দেওয়া হয়েছে শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্যদের, যা ২০১৯ সালের সংখ্যায় প্রায় ৯ গুণ।

যুক্তরাজ্যের জনগোষ্ঠীর একটি বিশাল অংশ অভিবাসনবিরোধী। ২০১৯ সালের নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টির জয়ের অন্যতম চাবিকাঠি ছিল অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি।

বৈধ অভিবাসনের ঢল ঠেকাতে ২০২৩ সালে একটি আইন পাস করে ব্রিটেনের পার্লামেন্ট। সেই আইনে বলা হয়, এখন থেকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট বা স্নাতকোত্তর এবং সরকারি স্কলারশিপে কোনো কোর্স করতে আসা শিক্ষার্থীরা ব্যতীত অন্যান্য শিক্ষার্থীরা আর তাদের পরিবারের সদস্যদের আনতে পারবেন না এবং ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে এই আইন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সোমবার ১ জানুয়ারি থেকে দেশটিতে কার্যকর করা হয়েছে সেই আইন।

এদিকে বৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি অবৈধ অভিবাসী নিয়ন্ত্রণেও পদক্ষেপ নিয়েছে লন্ডন। গত ৬ ডিসেম্বর রুয়ান্ডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাইরুতার সঙ্গে একটি চুক্তি করেছেন জেমস ক্লেভারলি। সেই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, দেশের অভিবাসী কেন্দ্রগুলো থেকে সব অভিবাসনপ্রত্যাশীকে রুয়ান্ডা পাঠাবে ব্রিটেন। রুয়ান্ডা তাদের আশ্রয় দেবে এবং তার বিনিময়ে আপাতত পূর্ব আফ্রিকার এই দেশটিকে এককালীন ১৪ কোটি পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ হাজার ৯৩৯ কোটি ৬৯ লাখ ৬৫ হাজার টাকা) প্রদান করবে যুক্তরাজ্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *