বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সর্বশেষ

ইন্দোনেশিয়ায় বন্ধ হলো টিকটকের কার্যক্রম

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ইন্দোনেশিয়া থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছে সংক্ষিপ্ত ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটক। আজ বুধবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫ টার পর থেকে এই অ্যাপটি আর ইন্দোনেশিয়ার কার্যকর নেই।

মূলত সাম্প্রতিক এক সরকারি আদেশের জেরেই ইন্দোনেশিয়া থেকে নিজেদের ব্যবসায়ীক কার্যক্রম গুটিয়ে নিচ্ছে টিকটক। গত সপ্তাহে দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রী জুলকিফ্লি হাসান এক সভায় বলেছিলেন, ‘ইন্দোনেশিয়ায় এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আর ই-কমার্স এক হয়ে গেছে। এভাবে চলতে পারে না…দুটি সম্পূর্ণ আলাদা। সবাইকে নিজ নিজ জায়গার মধ্যে থাকতে হবে।’

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ইন্দোনেশিয়াতেও তুমুল জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটক। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম এই দ্বীপরাষ্ট্রে বসবাসকারী ১৭ কোটি ৮০ লাখ মানুষের মধ্যে ১২ কোটি ৫০ লাখ বাসিন্দা টিকটক ব্যবহার করেন।

বিপুল ব্যবহারকারী থাকার ফলে টিকটককে ঘিরে বিশাল ই-কমার্স নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছিল দেশটিতে। বিক্রেতাদের অনেকেই তাদের পণ্যের বিজ্ঞাপন বা প্রচারকাজ চালানো এবং ক্রেতাদের সঙ্গে সংযোগ রাখতে টিকটককে ব্যবহার করা শুরু করেন।

এতে একদিকে টিকটকে জনপ্রিয় বিক্রেতাদের পণ্য বিক্রিতে ব্যাপক সুবিধা হলেও বাকিরা উপকৃত হননি। সরকারও প্রাপ্য কর থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল।

বিশ্বের যেসব দেশ টিকটকের ই-কমার্সে যুক্ত হওয়ার অনুমোদন দিয়েছিল, ইন্দোনেশিয়া তাদের মধ্যে অন্যতম। ২০২১ সালের শুরুর দিকে দেশটিতে পাইলট আকারে ই-কমার্স খাতে যুক্ত হয় টিকটক।

টিকটক যুক্ত হওয়ার পর থেকে রীতিমতো ফুলে-ফেঁপে উঠতে থাকে ইন্দোনেশিয়ার ই-কমার্স খাত। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশটির ই-কমার্স খাতের আকার ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলার, ২০১৮ সালের তুলনায় এটি ৬ গুণ বড়।

কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, এই বিশাল আকারের ই-কমার্স খাত থেকে লাভবান হচ্ছে কেবল টিকটকের মালিক কোম্পানি বাইটড্যান্স এবং ইন্দোনেশিয়ার অল্প কিছু খুচরা ব্যবসায়ী— যারা ব্যবহারকারীদের কাছে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। সরকার ও অন্যান্য অসংখ্য খুচরা ব্যবসায়ীরা তেমন সুফল ভোগ করছেন না।

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদাদো গত মাসে এক বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘আমাদের অবশ্যই ই-কমার্স খাতের বিষয়ে আরও সতর্ক ও যত্নশীল হতে হবে। যেকোনো খাত যদি নিয়ন্ত্রণে থাকে— তাহলে খুবই ভাল, নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে সমস্যা।

‘আমাদের অবশ্যই দেশের প্রচলিত আইন ও বিধিবিধানকে গুরুত্ব দিতে হবে। এ কারণে আমরা টিকটকের ক্রমশ ই-কমার্স খাতে রূপান্তর হওয়াকে আর সমর্থন করতে পারছি না।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *