খেলাধুলা

আফগানদের ১৪৯ রানে হারালো কিউইরা

ইংল্যান্ডকে হারিয়ে অবিস্মরণীয় জয় তুলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও অঘটনের আশায় ছিল আফগানিস্তান। কিন্তু বিশ্বকাপে আরেকটি আফগান রূপকথার জন্ম দিতে পারেনি রশিদ-নবীরা। তাদের ১৪৯ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে টানা চতুর্থ জয় তুলে নিয়েছে নিউজিল্যান্ড।২৮৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামা আফগানদের ৩৪.৪ ওভারে ১৩৯ রানে গতবারের রানার্স আপরা গুটিয়ে দিয়েছে।

চেন্নাইয়ে বাজে ফিল্ডিংয়ের পর ব্যাট হাতেও আফগানদের প্রদর্শনী আহামরি ছিল না। বরং যাচ্ছেতাই ব্যাটিংয়ে শুরুতেই ম্যাচ থেকে তারা ছিটকে পড়ে। টপ অর্ডার থেকে শুরু করে মিডল অর্ডারের কেউ বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। বলার মতো পার্টনারশিপও দাঁড় করাতে পারেনি কোনও। বরং নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন টপ অর্ডারের রহমত শাহ। মিডল অর্ডারে ২৭ রান করেছেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। নবী ৭ রানে ধরাশায়ী হয়েছেন। ব্যাটাররা লড়াই করতে না পারায় আফগানিস্তান ৩৪.৪ ওভারেই অলআউট হয়েছে।

কিউইদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন মিচেল স্যান্টনার ও লকি ফার্গুসন। বামহাতি স্পিনিং অলরাউন্ডার স্যান্টনার ৩৯ রানে তিন উইকেট নিয়েছেন। ১৯ রানে তিনটি নিয়েছেন ফার্গুসনও। ১৮ রানে দুটি নিয়েছেন ট্রেন্ট বোল্ট। একটি করে নিয়েছেন ম্যাট হেনরি ও রাচিন রবীন্দ্র।

ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারিয়ে আজ নিউজিল্যান্ডকেও একইভাবে চেপে ধরার লক্ষ্য ছিল আফগানদের। টস জিতে তাই শুরুতে কিউইদের ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিল হাশমতউল্লাহ শহীদীরা। কিন্তু যেভাবে ক্যাচ মিস আর বাজে ফিল্ডিং করেছে তাতে নিউজিল্যান্ডকে কম পুঁজিতে আটকে রাখার পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে।

পুরো ম্যাচে ৬টি জীবন দিয়েছে আফগানিস্তান। ক্যাচ মিস হয়েছে ৫টি। তার মধ্যে একটি স্টাম্পিংও মিস হয়েছে। শেষ দিকে যখন ল্যাথাম, ফিলিপস রানের গতি বাড়াচ্ছেন তখন ল্যাথাম জীবন পেয়েছেন দু’বার! ফিলিপসও একবার জীবন পেয়েছেন।

শুরুটা একেবারে খারাপ ছিল না নিউজিল্যান্ডের। প্রথম দিকের ম্যাচগুলোতে যেমন ব্যাটিং প্রদর্শনী দেখা গেছে সেই ঝলকটা অবশ্য এদিন দেখা যায়নি। ওপেনার ডেভন কনওয়ে দলের ৩০ রানে মুজিবের বলে ফিরেছেন। তার পর ৭৯ রানের জুটিতে দলকে এগিয়ে নিয়েছেন রাচিন রবীন্দ্র ও উইল ইয়াং। রাচিন রবীন্দ্র ৩২ রানে আউট হলে ভাঙে গুরুত্বপূর্ণ জুটি।

দলের ১০৯ রানে ওমরজাইয়ের বলে রবীন্দ্র আউট হওয়ার পর দ্রুত সময়ে আরও দুই উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় কিউই দল। উইল ইয়াংকে ওমরজাই ও ড্যারিল মিচেলকে (১) রশিদ খান আ্উট করে মুহূর্তেই কিউইদের বিপদে ফেলে দিয়েছিলেন। টপ অর্ডারে ফিফটির দেখা পেয়েছেন শুধু উইল ইয়াং। ৬৪ বলে ফেরার আগে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৪ রান করেছেন তিনি।

চাপের মুহূর্তে তার পর ইনিংসটা দিশা পেয়েছে মূলত ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক টম ল্যাথাম ও গ্লেন ফিলিপসের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে। ১৪৪ রানের জুটি গড়ে দলটাকে তিনশ ছুঁই ছুঁই স্কোরবোর্ড পেতে অবদান রেখেছেন তারা। ৪০ ওভারের পর রানের গতি বাড়ে এই দুই ব্যাটারের কারণেই। ৪৮তম ওভারে নাভিন তাদের দুজনকে আউট করে কিউইদের আরও চেপে ধরার সুযোগটা এনে দিয়েছিলেন। তখন স্কোর ছিল ৬ উইকেটে ২৫৫। কিন্তু কার্যকরী সেরকম কিছু করতে পারেনি আফগানরা। শেষ দিকে মার্ক চ্যাপম্যান ১২ বলে ২৫ রানের ক্যামিও ইনিংস উপহার দিলে ৬ উইকেটে ২৮৮ রান পর্যন্ত গেছে নিউজিল্যান্ডের ইনিংস।

৭৪ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৬৮ রান করেছেন ল্যাথাম। ফিলিপস অবশ্য একটি বেশি আগ্রাসী ছিলেন। ৮০ বলে ৪ চার ও ৪ ছক্কায় ৭১ রানে আউট হয়েছেন তিনি। সেজন্য ম্যাচসেরাও ফিলিপস।

আফগান বোলারদের মধ্যে ৪৮ রানে দুটি উইকেট নিয়েছেন নাভিন উল হক। ৫৬ রানে দুটি নিয়েছেন আজমতউল্লাহ ওমরজাইও। একটি করে নিয়েছেন মুজিব উর রহমান ও রশিদ খান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *