খেলাধুলা

মাত্র ৬ মাস বয়সেই নিভতে পারতো নেইমারের জীবনপ্রদীপ

ব্রাজিলের ইতিহাসে ফুটবল সম্রাট পেলের সঙ্গে যুগ্মভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। সেলেসাওদের সবচেয়ে বড় সুপারস্টারও। বিশ্ব ফুটবলের বর্তমান দুই সেরা লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর সেরার বিতর্কে ঘুরেফিরে আসে তার নাম। বলছি ব্রাজিল তারকা নেইমার জুনিয়রের কথা। যদিও এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপ কিংবা ফুটবলের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ সম্মানজনক পুরস্কার ব্যালন ডি’অর জিততে পারেননি, তবুও সেরাদের কাতারেই রাখা হয় পিএসজির এই তারকা ফুটবলারকে। বিশ্ব মাতানো নেইমার আজ পা দিয়েছেন ৩১ বছর বয়সে।

ফুটবল পায়ে সমর্থকদের মন জয় করতে যেমন সময় লাগেনি তার, তেমনি ক্যারিয়ারে বিতর্কও কম নেই ব্রাজিল পোস্টারবয়ের। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারোকে সমর্থন করতে গিয়ে সমর্থকদের তোপের মুখে পড়েছিলেন। এছাড়া নিজের পার্টি জীবন নিয়েও বারবার আলোচনায় আসে তার নাম।

ত্রিশের ঘরেই অনেক উত্থান-পতনের সাক্ষী থাকা নেইমারের জীবনপ্রদীপ নিভে যেতে পারতো মাত্র ছয় মাস বয়সেই। ‘নেইমার-বাবা ও ছেলের সংলাপ’জীবনীতে ব্রাজিল স্ট্রাইকারের বাবা জানান, তিনি এবং তার স্ত্রী অর্থাৎ নেইমারের মা নাদিনে ধরেই নিয়েছিলেন, তারা তাদের সন্তানকে হারিয়ে ফেলেছেন।

ঘটনাটি ঘটে নেইমারের যখন মাত্র ছয় মাস বয়স তখন। ভয়াবহ গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল নেইমারের পরিবার। পরে নেইমারের মা জানিয়েছেন, হতাশা ও অসহ্য যন্ত্রণার শিকার হয়ে আমি জুনিনহোর (নেইমারের পারিবারিক নাম) পরিবর্তে আমাকে নিয়ে যাবার জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিলাম।

পরবর্তীতে নেটফ্লিক্সে প্রকাশিত নেইমারকে নিয়ে ডকুমেন্টারিতে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন খোদ নেইমার। জানিয়েছিলেন, তার জীবনটাই এমন-বিশৃঙ্খলাপূর্ণ। বলেন, আমার যখন ছয় মাস বয়স, বাবা-মায়ের সঙ্গে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলাম। সেখান থেকেই বিশৃঙ্খলার শুরু হয়েছিল। পরে সুস্থ হয়ে উঠেছি। তারপর ফুটবলার হয়ে গেলাম। অবশ্যই আমি আনন্দের অনেক মুহূর্ত কাটিয়েছি, তবে আমার জীবনে এখনও অনেক বিশৃঙ্খলা রয়েছে।

১৯৯২ সালে জন্ম নেয়া নেইমারের নাম ব্রাজিলের ফুটবলে একটু একটু করে জোরালো হচ্ছিল ২০০৯ সাল থেকেই। পেলের ক্লাব সান্তোসের হয়ে পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করা ১৭ বছর বয়সী তরুণ দারুণ আলোড়ন তুলেছিলেন দেশটির ফুটবলে। তাই তো ২০১০ বিশ্বকাপেই তাকে দলে নেয়ার জন্য কোচ দুঙ্গার ওপর চাপ তৈরি করছিল ব্রাজিলের সমর্থকরা। ইউরোপেও নেইমারের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে এই সময়। ব্রাজিলের বিস্ময়বালককে দলে ভেড়াতে লোভনীয় প্রস্তাব নিয়ে হাজির হয় ওয়েস্ট হ্যাম ও চেলসির মতো ক্লাব। তবে নেইমার তখনই দেশ ছাড়তে ইচ্ছুক ছিলেন না।

২০১১ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে ব্রাজিলের জার্সি গায়ে অভিষেক নেইমারের। সেই তখন থেকেই সাম্বার দেশের ফুটবলের প্রাণ তিনিই। সেদিনের তরুণ নেইমার এখন ৩১ বছরে এসে পূর্ণ এক ফুটবলার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *