দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা অর্জনে শিক্ষার্থীদের সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান লিডবার্গ এডুকেশন। রাজধানী ঢাকার শ্যামলীতে অবস্থিত মমতাজ টাওয়ারের ৮ম তলায় রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার্থীদের মান সম্পন্ন সেবা নিশ্চিতে বদ্ধ পরিকর। প্রতিষ্ঠানটি গিয়ে চোখেও পড়লো তাই, শিক্ষার্থীরা যেন প্রতিষ্ঠান থেকে সর্বোচ্চ সেবা পেতে সেজন্য প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে মনোরম ও আধুনিক কাজের পরিবেশ। নজরকাড়া ইন্টেরিয়ির ডিজাইন, আধুনিক প্রযুক্তির মিশেলে তৈরী উন্নত ওয়ার্কস্টেশন যেন সেই বিষয়েরই ইঙ্গিত দেয়।
কিছুদিন আগে প্রজেক্টের একটি কাজে লিডবার্গের প্রধান নির্বাহী জনাব রাকিব হাসানের সাথে দেখা করতে যেতে হয়েছিল তাদের অফিসে। অফিসে ঢুকতেই চোখ পড়লো নান্দনিক ইন্টেরিয়র ডিজাইনের দিকে। যা প্রথমেই একটি সুন্দর অনুভূতি জাগালো। রিসিপশনিস্টের কাছে এ্যাপয়নমেন্টের কথা বলার পর বললেন একটু অপেক্ষা করতে। লবিতে বসে অপেক্ষা করতে করতে দেখলাম, কয়েকজন শিক্ষার্থী এসেছেন উচ্চশিক্ষার ব্যাপারে কাউন্সিলের সাথে দেখা করতে। রিসেপশনে যেয়ে বলার পরপরই তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হলো কাঙ্ক্ষিত কাউন্সিলরদের কাছে।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়টি হলো বিভিন্ন দেশের জন্য রয়েছে আলাদা ডেডিকেটেড কাউন্সিলর। সম্ভবত শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা চিন্তা করেই নেওয়া হয়েছে এই উদ্যোগ যাতে কাউন্সিলররা শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ সহযোগীতা করতে পারে। কয়েকজন কাউন্সিলরকে দেখলাম টেলিফোনেই দিক-নির্দেশনা দিচ্ছেন শিক্ষার্থীদেরকে।
অফিস সহকারী ছেলেটি ফাইল নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করছেন এক ডেস্ক থেকে আরেক ডেস্কে। কাউন্সিলরদের কাছ থেকে ফাইল নিয়ে যাচ্ছেন এডমিশন সেলে। আবার আগত অতিথিদের চা-কফি দিয়ে আপ্যায়ন করছেন। আমাকে দেখেই আমার কাছে এসে বলল, “কি খাবেন, চা-কফি নাকি ঠান্ডা ?” বললাম কফি। কিছুক্ষন পর কফির সাথে নিয়ে আসলো ওভাল্টিন কেক। কেক দেখে কিছুটা খুশি হলাম। সকালে নামকাওয়াস্তে একটা নাস্তা করার পর ভার্সিটির ক্লাস সেরেই এখানে আসা। খুদা তো কিছুটা ছিলই, খাবার দেখে যেন তা আরো বেড়ে গেল।
লবির সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে এসির ঠান্ডা বাতসে শরীর জুড়িয়ে নিচ্ছি আর কেক এবং কফির স্বাদ নিচ্ছি। কফিতে চুমুক দিতে দিতে চোখ বুলিয়ে নিলাম লবি রুমের চারদিকে। মনোমুগ্ধকর ও সৃজনশীলতার মিশ্রনে তৈরী কাজের ছোয়া যেন অফিসের প্রতিটি অংশে দৃশ্যমান। এ যেন পেটের সাথে সাথে চোখের পরিতৃপ্তি। পাশেই বসা ছিলেন এক ভদ্রলোক কথা বলতেই জানালেন, “তার মেয়ে সদ্য এইচএসসি পাশ করেছে, চাচ্ছেন মেয়েকে দেশের বাইরে পড়তে পাঠাতে তাই এখানে এসেছেন। এর আগে আরো বিভিন্ন এজেন্সীতে গিয়েছেন কিন্তুু আন্তরিকতা আর কাজের দিক থেকে এই প্রতিষ্ঠানকেই তার মনে ধরেছে। তাই ভিসা প্রসেসিং এখান থেকেই করাচ্ছেন।” কথায় কথায় আরো বলেন, ” এই প্রতিষ্ঠানে প্রতিটা কাজের জন্য আলাদা ডিপার্টমেন্ট রয়েছে, কাজ খুব দ্রুততার সহিত করা হয়। সবচেয়ে বড় ব্যাপার অনলাইনে ভিসা প্রসেসিং এর সমস্ত আপডেট পাওয়া যায়। যা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে একদমই নেই ।” ভদ্রলোক আমাকে বললেন, “তুমিও ঠিক জায়গায় এসেছ।” আমি বললাম, না আংকেল আমি বিদেশ নয় অন্য কাজে এসেছি “।
একটু পরে দেখা হল জুনিয়র এডমিশন এক্সিকিউটিভ ওমর ফারুক শুভ এর সাথে। তাকে বললাম ভাই ইন্টিরিয়র ডিজাইন তো জোস! কবে করলেন এসব? বললেন করেছি তো অনেকদিন, আপনিই তো আসেন না অনেকদিন। পরে তিনি আমাকে অফিসটা ঘুরে দেখাতে লাগলেন। তিনি বললেন, অফিসে কাজের পরিবেশের উন্নতি করা হয়েছে। পাশাপাশি কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত ওয়ার্কশপ ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এসব ওয়ার্কশপ ও সেমিনারে এই সেক্টরের অভিজ্ঞ দেশী ও বিদেশী ট্রেইনাররা অংশগ্রহন করেন,বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের দিক নির্দেশনা দেন।”
শুধু যে অফিসের ডিজাইন-ই নতুনত্ব আনা হয়েছে তা নয় সাথে সাথে প্রযুক্তিগত সক্ষমতাও বৃদ্ধি করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে ও দ্রুততার সহিত সেবা দেওয়ার জন্য যুক্ত করা হয়েছে আধুনিক ও উন্নত যন্ত্রপাতি। নিজস্ব ও আধুনিক সফটও্যার ব্যবহারের ফলে শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই সম্পূর্ণ প্রসেস দেখতে পারছে । কনফারেন্স রুমে প্রজেক্টরে জুনিয়র কাউন্সিলদের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে ধারনা দিচ্ছেন একজন সিনিয়র কাউন্সিলর। এডমিশন সেলে অফিসাররা শিক্ষার্থীদের ফাইল পত্র ঘাটাঘাটি করে শিক্ষার্থীদের কাঙ্খিত ও পছন্দমতো বিশ্ববিদ্যালয়ের এডমিশনের কাজ করছেন। পাশের আরেকটি রুমে শিক্ষার্থীদের ভিসার ভাইবার জন্য চলছে ওয়ার্কশপ।
মিনিট দশেক পরে অফিস এ্যাটেনডেন্ট এসে বলল, রাকিব স্যার ফ্রি হয়েছে আপনি এখন যেতে পারেন, শুভ ভাইয়ের সাথে কথা শেষে চলে গেলাম রাকিব স্যারের রুমে। ভিতরে ঢুকেই কুশলাদি বিনিময়ের পর অফিসের এই পরিবর্তন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বললেন, সুন্দর পরিবেশ ভালো কাজের জন্য সহায়ক। কাজের মাধ্যমেই আমরা ইতোমধ্যেই শিক্ষার্থীদের জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছি তাই স্বাভাবিক ভাবেই প্রতিষ্ঠানে কাজের চাপ বেশি। তাই কর্মীদের উপর এই কাজের চাপ যেন তাদের সেবাপ্রদানে বাধা না হয়ে দাঁড়ায় তাই এতো আয়োজন। কেননা কর্মীরা স্বতঃস্ফূর্ত থাকলে তারা শিক্ষার্থীদের নিজের সেরাটা দিয়ে সেবা প্রদান করতে পারবে। এক কথায় বলা যায় শিক্ষার্থীদের জন্যই এতো কিছু। ”
শেষমেশ নিজের প্রজেক্টের ব্যাপারে আলোচনা করে বেরিয়ে গেলাম। কাজের দরুন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কর্পোরেট অফিসে যাওয়া হয়েছে কিন্তুু এই অফিসের মতো এত সুন্দর অভিজ্ঞতা আর কোথাও হয়নি। এমপ্লয়ি ও ক্লায়েন্টদের মধ্যে এত আন্তরিকতা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিরল। সুনিপুণ ও দক্ষ হাতে সবকিছু নিয়ন্ত্রনের জন্য লিডবার্গ এডুকেশনের সিইও জনাব রাকিব হাসান অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার।
মোঃ মুবতাসিন শিহাব ( নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় )