বিদেশ শিক্ষা সর্বশেষ স্কলারশিপ

৩১.৭% শিক্ষার্থীর ক্যারিয়ার হিসেবে প্রথম পছন্দ বিদেশ যাত্রা

উন্নত ক্যারিয়ার গড়তে শিক্ষার্থীদের প্রায় ৩১ দশমিক ৭ শতাংশই উচ্চ শিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন, এছাড়াও ২৯.৭ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্যারিয়ার হিসেবে সরকারি চাকরির স্বপ্ন দেখছেন। তবে শিক্ষা জীবনের মাঝামাঝিতে এসেও এখনও নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে কিছুই ভাবছেন না প্রায় ২২ শতাংশ শিক্ষার্থী।

চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩০ মে পর্যন্ত  সারা দেশের ৮৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১৫৭০ সংখ্যক শিক্ষার্থীর ওপর পরিচালিত একটি জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে। জরিপটি পরিচালনা করেছে বেসরকারি সংস্থা আঁচল ফাউন্ডেশন।

শুক্রবার (৭ জুন) আঁচল ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ‘বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির কারণ’ শিরোনামে জরিপের তথ্য তুলে ধরা হয়।

জরিপের প্রতিবেদনে বলা হয়, আঁচল ফাউন্ডেশন শিক্ষার্থীদের কাছে তাদের ক্যারিয়ার ভাবনা সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলো। কিন্তু তাদের সাথে কথা বলে উঠে এসেছে বিভিন্ন চমকপ্রদ তথ্য। জরিপে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে ৩১.৭ শতাংশ শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন, ২৯.৭ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্যারিয়ার হিসেবে সরকারি চাকরি করতে চান, ৯.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ব্যবসা বা উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, মাত্র ৭.১ শতাংশ শিক্ষার্থী বেসরকারি চাকরি করতে চান। এছাড়া বাকি শিক্ষার্থীরা এখনো কোনোরূপ ক্যারিয়ার ভাবনা ঠিক করেনি যা মোট শিক্ষার্থীর প্রায় ২২ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনার পরিবেশ নিয়ে কতটুকু সন্তুষ্ট এই প্রশ্ন ছিল সকলের কাছে। জরিপে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষার পরিবেশ নিয়ে পুরোপুরি অসন্তুষ্ট ৩৩.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী, মোটামুটি সন্তুষ্ট ৫৮.১ শতাংশ এবং পুরোপুরি সন্তুষ্ট মাত্র ৮.৪ শতাংশ। পড়াশুনার পরিবেশ নিয়ে অসন্তুষ্টি হওয়া পরবর্তীতে বিভিন্ন ধরনের মানসিক সমস্যা তৈরি করতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন।

ক্যারিয়ার নিয়ে হতাশা : ৫২.৪ শতাংশের মাথায় আত্মহত্যা চিন্তা

এমনকি জরিপে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫২.৪ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন তাদের মাথায় আত্মহত্যা চিন্তা এসেছে এবং সে সকল শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা ভাবনার পেছনে বেশ কিছু কারণ উঠে এসেছে। এর মধ্যে প্রধান কারণ হলো শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার নিয়ে হতাশা।

এসকল শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৩০ শতাংশ ক্যারিয়ার নিয়ে হতাশায়, ১৬.২ শতাংশ বাবা-মায়ের সাথে অভিমানের ফলে, ৯.৭ শতাংশ প্রেমঘটিত বিষয়ে, ৯ শতাংশ অর্থনৈতিক সমস্যাগ্রস্ত হয়ে, অন্যরা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করায় ৪.৩ শতাংশ এবং ৩০.৮ শতাংশ শিক্ষার্থী অন্যান্য বিভিন্ন কারণে আত্মহত্যা করার চিন্তা এসেছে বলে জানিয়েছেন।

হতাশায় এগিয়ে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে হতাশার উপসর্গ নিয়ে তুলনা করতে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে হতাশার উপসর্গ অনুভব করার হার বেশি। ৮৩.৪ শতাংশ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন তারা এই ধরনের বিষণ্নতার  উপসর্গগুলোর মুখোমুখি হয়েছেন। বাকি ১৬.৬ শতাংশ জানিয়েছেন তাদের  মাঝে হতাশার উপসর্গ দেখা যায় নি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে হতাশার চিত্র তুলনামূলক কম। ৭৯.৯ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন তারা হতাশার উপসর্গগুলো অনুভব করেছেন। অন্যদিকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬১.৩ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন তারা এই ধরনের উপসর্গের মধ্য দিয়ে গিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *