বিদ্যালয় বার্তা সর্বশেষ

ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের উচ্চহারে টিউশন ফি আদায়ের অভিযোগ অভিবাবকদের

দেশের অধিকাংশ ইংরেজি মাধ্যম স্কুল উচ্চ আদালতের নির্দেশ অবমাননা করে ও সরকারি নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে অযৌক্তিকভাবে উচ্চ হারে টিউশন ও রি-এডমিশন ফি আদায় করছে বলে অভিযোগ করেছেন অভিভাবকরা। আজ শনিবার (২৬ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তারা। সন্তানদের মানসিকভাবে হেয় করা হচ্ছে বলেও জানান তারা। বাংলাদেশ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল পেরেন্টস ফোরামের সভাপতি এ কে এম আশরাফুল হক এতে সভাপতিত্ব করেন।

লিখিত বক্তব্যে সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আজম খান বলেন, করোনাকালে যখন ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলো অনলাইন ক্লাস করিয়ে শতভাগ টিউশন ফি দাবি করছিল এবং বকেয়া টিউশন ফি’র কারণে ছাত্র-ছাত্রীদের অনলাইন ক্লাস থেকে বের করে দিচ্ছিল, পরীক্ষা দিতে দিচ্ছিল না কিংবা রেজাল্ট আটকে রাখছিল; সে সময়ে অন্যায়ের প্রতিবাদে জন্ম নিয়েছিল পেরেন্টস ফোরাম। বর্তমানে অভিভাবক ফোরামের সদস্য সংখ্যা প্রায় ৪৫ হাজার। প্রায় ১৫০টি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের অভিভাবকরা ফোরামে যুক্ত।

তিনি বলেন, অভিভাবকরা নিজেদের আয়ের একটা বড় অংশ ব্যয় করি সন্তানদেরকে বৈশ্বিক নাগরিক হিসাবে গড়ে তোলার জন্য। যেহেতু দেশের জাতীয় কারিকুলাম এবং শিক্ষার মান নিয়ে সাধারণ অভিভাবকসহ সবার মাঝে সংশয় আছে এবং ইংরেজি মাধ্যম কারিকুলাম যেহেতু আন্তর্জাতিক মানের, সেহেতু ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে আমরা আমাদের সন্তানদের পড়াচ্ছি।

এ আবেগকে পুঁজি করে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলেগুলো দিন দিন টিউশন ফি বাড়িয়েই চলেছে। এছাড়া বছর বছর রি-এডমিশন ফি নিচ্ছে আদালতের আদেশ এবং সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে। এমন দাবি করে তিনি বলেন, কিছু কিছু বড় স্কুল আবার রি-এডমিশন ফি ১২ মাসের মধ্যে ভাগ করে টিউশন ফি অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়ে দিয়েছে। বেশিরভাগ স্কুল রি-এডমিশন ফি ১০ হাজার থেকে শুরু করে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছে। ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোতে মাসিক টিউশন ফি ৮ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। কিছু কিছু স্কুলে মাসিক টিউশন ফি ৮০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত।

তিনি আরো বলেন, ভর্তি ফি ৫০ টাকা থেকে শুরু করে আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। কোনও কোনও স্কুলে ভর্তি ফি ২ লাখ টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। তাছাড়া কিছু কিছু স্কুল ডেভেলপমেন্ট ফি, ইউটিলিটি ফি, বিবিধ ফি’সহ বিভিন্ন নামে ফি আদায় করছে। ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোর অতি বাণিজ্যিক আচরণের কারণে অভিভাকরা দিশেহারা। শিশুদের তথা দেশের ভবিষ্যত প্রজন্মের সুরক্ষা ও সুশিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতে সরকার, অভিভাবক এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের সমন্বিত দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন।

কিন্তু অধিকাংশ ইংরেজি মাধ্যম স্কুল কর্তৃপক্ষ উচ্চ আদালতের নির্দেশ অবমাননা করে, এমনকি সরকারি নির্দেশাবলীর কোনও তোয়াক্কা না করে অত্যন্ত অমানবিক ও অযৌক্তিকভাবে অভিভাভবকবৃন্দকে বিভিন্ন প্রকার ভয়-ভীতি দেখিয়ে দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থার সঙ্গে অসামঞ্জস্যমূলক উচ্চ হারের টিউশন ফি এবং রি-এডমিশন ফি আদায়ের অপচেষ্টায় লিপ্ত আছে। অনেকক্ষেত্রে সন্তানদেরকে ও মানসিকভাবে হেয় করা হচ্ছে, যা আমাদের সন্তানদের সাংবিধানিক ও মৌলিক মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, যোগ করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *