শেষ সময়ে নতুন বিষয় পড়ার দরকার নেই। আগের পড়া বিষয়গুলো দেখে নিন। সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। বাংলার ক্ষেত্রে সাহিত্য, ব্যাকরণ ও রচনা অংশ একবার চোখ বুলিয়ে নেবেন। বাংলাদেশ বিষয়াবলিতে পড়ার শুরু আছে, কিন্তু শেষ নেই। তাই এখন সব পড়ার প্রয়োজন নেই। শুধু মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান এবং অর্থনীতিসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো দেখে যাবেন। তথ্য-উপাত্তের কোনো নোট করা থাকলে তা রিভিশন দিতে হবে।
আন্তর্জাতিক বিষয়াবলির ধারণাগত বিষয়, সংশ্লিষ্ট সংজ্ঞা এবং সমসাময়িক বিষয়গুলোর প্রয়োজনীয় তথ্য একবার পড়ে নেবেন। গাণিতিক যুক্তির সূত্র এবং জ্যামিতি রিভিশন দিতে হবে। মানসিক দক্ষতার ক্ষেত্রেও প্রয়োজনীয় নিয়মনীতিগুলো দেখে যাবেন। ইংরেজিতে প্রায় পুরোটাই মৌলিক দক্ষতানির্ভর পরীক্ষা হয়ে থাকে। এই মুহূর্তে ভোকাবুলারি, অনুবাদ কিংবা রিডিং কমপ্রিহেনশন না পড়ে শুধু রচনার পয়েন্ট ও তথ্যগুলো দেখে নিতে পারেন। বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তির অপেক্ষাকৃত কঠিন বিষয়গুলো শেষ সময়ে একবার রিভিশন দেবেন।
পরীক্ষার হলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সময় ব্যবস্থাপনা। লিখিত পরীক্ষায় বেশি প্রশ্নের উত্তর করতে হয়। তাই সময় পরিকল্পনার অভাবে অনেক প্রার্থীই বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর করতে পারেন না। ২০০ নম্বরের পরীক্ষায় প্রতি নম্বরের জন্য ১.২ মিনিট এবং ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় প্রতি নম্বরের জন্য ১.৮ মিনিট করে সময় পাবেন। প্রতি প্রশ্নের জন্য সময় সুনির্দিষ্ট রেখে উত্তর করলে সব প্রশ্নের উত্তর যথাযথ সময়ে শেষ করা যাবে। তবে আপনি যদি কিছু প্রশ্নের উত্তর খুব ভালো জানেন এবং কিছু প্রশ্ন আনকমন থাকে, তাহলে জানা প্রশ্নগুলো কিছু বেশি সময় নিয়ে উত্তর করতে পারেন। অনেকেই বাংলা ও ইংরেজি রচনা লেখার জন্য শেষ দিকে পর্যাপ্ত সময় পান না। অথচ এই দুটি রচনায় ৯০ নম্বর বরাদ্দ থাকে। প্রতিটি রচনার জন্য অন্তত এক ঘণ্টা করে সময় রাখা উচিত।
বিসিএস পরীক্ষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে লিখিত। লিখিত পরীক্ষায় যত বেশি নম্বর পাওয়া যাবে, ক্যাডার হওয়ার পথ তত বেশি সুগম হবে। ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় ৫০ শতাংশ নম্বর পেলেই পাস করা যাবে। তবে ক্যাডার হওয়ার জন্য সাধারণত পাস নম্বরের চেয়ে অনেক বেশি নম্বর প্রয়োজন হয়ে থাকে। লিখিত পরীক্ষায় খুব ভালো করার পর মৌখিক পরীক্ষায় মোটামুটি নম্বর পেলেও ক্যাডার পদ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সাম্প্রতিক বিসিএসগুলোতে ক্যাডার পদের পাশাপাশি অনেক নন-ক্যাডার পদেও নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। লিখিত পরীক্ষা ভালো দেওয়ার মাধ্যমে ক্যাডার কিংবা নন-ক্যাডারের যেকোনো একটি চাকরি পাওয়ার দৌড়ে নিজেকে এগিয়ে রাখতে পারবেন।
অনেক প্রার্থী ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞানে যথেষ্ট দুর্বল। তাই এই তিন বিষয়ে যাঁরা খুব ভালো করতে পারবেন, তাঁরাই ক্যাডার হওয়ার ক্ষেত্রে অনেকখানি এগিয়ে থাকবে। গণিত ও বিজ্ঞানে পূর্ণ নম্বর পাওয়ার সুযোগ থাকে। বাংলা ব্যাকরণ ও সাহিত্য অংশেও ভালো নম্বর ওঠানো যায়। আপনি যে বিষয়ে পারদর্শী তাতে খুব বেশি নম্বর পাওয়ার চেষ্টা করবেন, যাতে কম পারদর্শী বিষয়ের ক্ষতি এখানে পুষিয়ে নিতে পারেন
খাতায় অপ্রয়োজনীয় তথ্য লেখা থেকে বিরত থাকুন। অনেকের মাঝেই লিখিত পরীক্ষায় অপ্রাসঙ্গিক তথ্য দিয়ে পৃষ্ঠা ভরাট করার মানসিকতা কাজ করে, যা কার্যত হিতে বিপরীত হতে পারে। লিখিত পরীক্ষায় সুন্দর উপস্থাপন কৌশল, ফ্রি হ্যান্ড রাইটিং এবং খাতা সাজানো কাঙ্ক্ষিত নম্বর পেতে সহায়তা করে। খাতায় পেনসিল দিয়ে মার্জিন টানুন। কালো ও নীল কালি ব্যবহার করবেন। চাইলে হাইলাইটারও ব্যবহার করতে পারেন। অতিরিক্ত শিটে পেনসিল দিয়ে নম্বর দেবেন। সবার জন্য শুভকামনা।
সূত্র : প্রথম আলো