বিশ্বকাপের ইতিহাসে আফ্রিকার একমাত্র দল হিসেবে বিশ্বকাপের শেষ চারে নাম তুলে ইতিহাস গড়েছে। শুধু তাই নয় ফুটবল বিশ্বকাপের শেষ চারে ওঠা প্রথম আরব দেশ মরক্কো। এর আগে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে আগেই ইতিহাস গড়েছিল মরক্কো।
এবার তারা গড়ে ফেলল আরও বড় কীর্তি। আজ শনিবার তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে পর্তুগালকে ১-০ গোলে হারিয়েছে দেশটি। ম্যাচের প্রথমার্ধে গোল করে মরক্কো। ৪২ মিনিটের ওই গোলেই সেমিফাইনালে উঠে গেছে আফ্রিকার প্রতিনিধিরা।
মরক্কোর বিশ্বকাপে অভিষেক হয় ১৯৭০ সালে। আফ্রিকার প্রথম দেশ হিসেবে ১৯৮৬ আসরে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব পার করেছিল তারা। আফ্রিকার চতুর্থ দল হিসেবে এবারের বিশ্বকাপে শেষ আটে খেলে প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনালে উঠল মরক্কো।
এদিনও প্রথম একাদশে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে বেঞ্চে রাখেন কোচ ফের্নান্দো সান্তোস। প্রথম থেকেই আক্রমণে নামে পর্তুগাল। দুই প্রান্ত ব্যবহার করে বক্সে ক্রস করার চেষ্টা করে তারা। ৪ মিনিটের মাথায় ব্রুনো ফের্নান্দেজের ফ্রিকিক থেকে দুরন্ত হেড করেন জোয়াও ফেলিক্স। তার হেড বাঁচিয়ে দেন মরক্কোর গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনো।
মাঝে মাঝে দুরন্ত আক্রমণ চালাচ্ছিল মরক্কোও। প্রান্ত ধরে কয়েকটি আক্রমণ করেছেন হাকিমি, জিয়েচরা। কিন্তু খুব একটা সমস্যায় পড়েননি পর্তুগালের গোলরক্ষক কোস্তা।
৩০ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ে জোরালো শট মারেন ফেলিক্স। বল সরাসরি গোলের দিকে যাচ্ছিল। কিন্তু ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে গোলের একটু উপর দিয়ে বল চলে যায়।
৪০ মিনিটে গোলের সুযোগ পায় পর্তুগাল। বাঁ দিক থেকে ক্রসে শট মারেন ফেলিক্স। কিন্তু তার শট বার উঁচিয়ে চলে যায়।
৪২ মিনিটে এগিয়ে যায় মরক্কো। নিজেদের মধ্যে বেশ কয়েকটি পাস খেলে বাঁ প্রান্ত ধরে আক্রমণে ওঠে মরক্কো। বক্সে বল ভাসিয়ে দেন বৌফাল। আগুয়ান গোলরক্ষক কোস্তা বলের নাগাল পাওয়ার আগে হেডে গোল করেন ইউসুফ এন-নেসিরি।
গোল খাওয়ার পরে শোধ করার চেষ্টা করে পর্তুগাল। সুযোগও পায় তারা। বক্সের বাইরে থেকে ব্রুনো ফের্নান্দেজের শট বারে লেগে বেরিয়ে যায়। প্রথমার্ধে ০-১ গোলে পিছিয়ে সাজঘরে যায় পর্তুগাল।
বিরতির পর ম্যাচের ৫০ মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়ানোর সুযোগ ছিল মরক্কোর। ৪৯ মিনিটের মাথায় হাকিম জিয়েচের ফ্রিকিক আর একটু হলে জালে জড়িয়ে যেত। কোনও রকমে সেই বল বার করেন কস্তা।
৫২ মিনিটে বদলি হিসেবে নামেন রোনালদো। এরপর একের পর আক্রমণ চালায় পর্তুগাল। বেশ কয়েক বার মরক্কোর বক্সে পৌঁছেও যান রোনালদোরা। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সব আক্রমণ প্রতিহত হয়ে যায়। গোল না পেয়ে অস্থির হয়ে ওঠেন পর্তুগালের ফুটবলাররা।
ম্যাচের ৮২ মিনিটে আবারও দারুণ সুযোগ পায় পর্তুগাল। রোনালদোর পাসে দারুণ শট নিয়েছিলেন ব্রুনো ফের্নান্দেজ। ঝাঁপিয়ে পড়ে সেটি ঠেকিয়ে দেন মরোক্কান গোলকিপার ইয়াসিন বুনো।
একের পর এক আক্রমণ করেও শেষ পর্য কোনও গোল পাননি রোনালদো, ফের্নান্দেজরা। ০-১ গোলের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাদের। প্রথম আরব দেশ হিসেবে সেমিফাইনালে ওঠে মরক্কো।