তুরস্ক, অর্থনীতি-ভৌগোলিক অবস্থান বিশ্ব-রাজনীতির ভিন্নতার কারণে বরাবরই থাকে আলোচনার শীর্ষে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তুরস্ক অর্জন করেছে উন্নত রাষ্ট্রের কাতারে যাওয়ার যোগ্যতাসমূহ। তবে এর মূলে রয়েছে তাদের আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা। তুরস্কের শিক্ষা ব্যবস্থা পুরো ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সেরা দশে অবস্থান করে নিয়েছে। এছাড়াও ওয়ার্ল্ড র্যাংকিংয়েও প্রথম সারিতে রয়েছে তুরস্কের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়৷ ফলে প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থেকে অসংখ্য শিক্ষার্থী পাড়ি জমাচ্ছে তুরস্কে।
টিউশন ফি
তুরস্কের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে টিউশন ফি অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম। একজন শিক্ষার্থীকে স্নাতক প্রোগ্রামের জন্য সাধারণত ২৪০ থেকে ৭৫০ ডলার টিউশন ফি প্রদান করতে হয়। অপরদিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ৫ হাজার থেকে ২০ হাজার ডলার টিউশন ফি। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি প্রোগ্রামের টিউশন ফি সাধারণত যথাক্রমে ৩০০ থেকে ৬০০ ও ৫ হাজার থেকে ২০ হাজার ডলার হয়ে থাকে।
স্কলারশিপ
তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রতিবছরই আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ প্রদান করে থাকে। এই স্কলারশিপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ফুল ফ্রি বা আংশিক অর্থ প্রদানের মাধ্যমে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে পারে। তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে স্কলারশিপের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা, সময়সীমা, আবেদন এর যোগ্যতাসহ সকল বিষয় দেওয়া রয়েছে। যেগুলো অনুসরণ করে খুব সহজেই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করা যায়।
তুরস্কে শিক্ষা বৃত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও টিউশন ফি, এক বছরের ভাষা (টার্কি) কোর্স, আবাসন ও খাবার, স্বাস্থ্য-বিমা, মাসিক সম্মানী ভাতা (স্নাতক ৮০০ লিরা, স্নাতকোত্তর এক হাজার ১০০ লিরা ও পিএইচডিতে ১ হাজার ৬০০ লিরা) দেওয়া হয়। এখন ১ লিরা সমান ৬ টাকার বেশি। এই শিক্ষা বৃত্তিতে প্রথমবার যাওয়া ও পড়ালেখা শেষ করে দেশে ফেরার বিমান টিকিট অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এর বাইরে পার্টটাইম ও পড়াশোনা শেষে ফুলটাইম চাকরি এবং নাগরিকত্বের সুযোগও রয়েছে।
তুরস্কের বিভিন্ন স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে হলে একজন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীকে স্নাতকের জন্য এসএসসি বা সমমান ও এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় ৭০% এবং স্নাতকোত্তর-পিএইচডির জন্য স্নাতক-স্নাতকোত্তরে ৭৫% নম্বর থাকতে হয়। তবে মেডিকেলে ভর্তি হতে চাইলে ৯০% নম্বর লাগবে।
আবেদনের সময়
তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবছর নতুন সেশনে আবেদন শুরু হয় ১০ জানুয়ারি থেকে। যা চলে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। আগ্রহীরা এ সময়ের মধ্য আবেদন সম্পন্ন করবেন।
ভাষা
তুরস্কে পড়াশোনার ভাষা তুর্কি হলেও কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজিতে পড়ার সুযোগ দেয়। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী টোফেল বা জিআরই স্কোর থাকতে হয়। তুরস্কে আইইএলটিএস স্কোর গ্রহণযোগ্য নয়।
বয়স
স্নাতকের জন্য আবেদন করতে বয়স হতে হবে ২১ বছরের নিচে। স্নাতকোত্তরে আবেদনের বয়স ৩০ বছরের নিচে। পিএইচডি ৩৫ বছরের নিচে। আর রিসার্চ প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে বয়স হতে হবে ৪৫ বছরের নিচে।
প্রয়োজনীয় নথিপত্র
(১) পাসপোর্ট সাইজের ছবি (সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড)
(২) পাসপোর্ট অথবা জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্মসনদের স্ক্যান কপি (ইংরেজি কপি হতে হবে)
(৩) সকল ডিগ্রির সার্টিফিকেট এবং মার্কশিট
(৪) টোফেল অথবা জিআরই ইত্যাদির সার্টিফিকেট (যদি থাকে)
(৫) দুটি রেফারেন্স লেটার
(৬) সহ-শিক্ষামূলক কার্যক্রমের সার্টিফিকেট (যদি থাকে)
আবেদন
তুরস্কের উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন অনলাইন মাধ্যমে হয়ে থাকে এবং এটির সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াই হয় বিনামূল্যে।