ত্বকের সুরক্ষায় গরম পানির ব্যবহারকে সাধারণত বলা হয় স্টিম থেরাপি। ত্বকের জেল্লা বাড়াতে এ পদ্ধতি দারুণ কার্যকর। তবে এর ক্ষতিকর দিকও কিন্তু রয়েছে।
উষ্ণ আবহাওয়ায় ত্বকের নানা সমস্যায় নাজেহাল হতে হয় কমবেশি সবাইকে। তৈলাক্ত ত্বকে এ সমস্যা দেখা দেয় অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি। কারণ, তৈলাক্ত ত্বকে সহজেই বাইরের ধুলাবালি ও ময়লা জমে। ফলে এ ধরনের ত্বকে ব্রণ, কালো ছোপ দাগ বেশি হয়ে থাকে।
তাই এ সময় সব ধরনের ত্বককে পরিষ্কার, সুস্থ ও আর্দ্র রাখার জন্য গরম পানির ভাপ নিতে পারেন। কারণ, এতেই ত্বকের সব সমস্যা এক নিমেশে সমাধান হয়ে যাবে বলে মনে করেন চর্ম বিশেষজ্ঞরা।
তারা মনে করেন, স্টিম থেরাপি মুখের ত্বকের ছিদ্রগুলো খুলতে, মৃত কোষ ও ময়লা দূর করতে সাহায্য করে। ব্ল্যাকহেডস বা হোয়াইটহেডসের সমস্যায়ও এই পদ্ধতি দারুণ কার্যকর। নিয়মিত গরম পানির ভাপ নিলে ব্ল্যাকহেডস বা হোয়াইটহেডস নরম হয়। ফলে ত্বক থেকে এগুলো সহজে নির্মূল করা যায়।
তা ছাড়া গরমের দিনে ত্বকে সহজেই ক্লান্তি নেমে আসে। ত্বক নিস্তেজ হয়ে পড়ে অনেকটাই। ত্বকের ক্লান্তি ভাব দূর করতে এই স্টিম থেরাপির ওপরই ভরসা রাখতে পারেন। কারণ, এতে মুখের রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা স্বাভাবিক থাকে। ফলে ত্বকে অক্সিজেন সরবরাহ ভালো হয়।
স্টিম থেরাপি বাড়িতে নিতে গরম পানির ভাপ মুখে নিতে পারেন। এ ছাড়া একটি ছোট রুমাল গরম পানিতে ডুবিয়ে তা থেকে পানি বের করে ভেজা তোয়ালে থেকে হালকা গরম ভাবও মুখে অ্যাপ্লাই করতে পারেন।
স্টিম থেরাপি শুষ্ক ত্বকে আর্দ্রতা বজায় রাখতে দারুণ কার্যকর। ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করার আগে ফেস স্টিমিং পদ্ধতি অনুসরণ করলে তা ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে। সেই সঙ্গে ত্বক হয়ে ওঠে কোমল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের চামড়া কুঁচকে যায়। ভাপ নিলে ত্বকে কোলাজেন ও এলাস্টিনের উৎপাদন বেড়ে যায়, যা ত্বক মসৃণ ও টানটান রাখতে সাহায্য করে।
আপনার ব্রণের সমস্যা থাকলে গরম পানির মধ্যে নিমপাতা দিয়ে ভাপ নিতে পারেন। ত্বকের হারানো জেল্লা ফিরে পেতে তাই প্রতিদিনের নিত্যসঙ্গী করে তুলতে পারেন স্টিম থেরাপিকে।
তবে এর দুটি ক্ষতিকর দিকও আছে। প্রথমটি হলো কখনও অপরিষ্কার ত্বকে গরম পানির ভাপ নিতে যাবেন না। এতে ত্বকের বাইরে লেগে থাকা ময়লা খোলা লোমকূপের ভেতরে ঢুকে যেতে পারে। এ ক্ষতিকর প্রভাব এড়াতে স্টিম নেয়ার আগে অবশ্যই ভালো কোন ফেসওয়াশ দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করে নিন।
ত্বকে স্টিম নেয়ার দ্বিতীয় ক্ষতিকর প্রভাব হলো নিয়মিত স্টিম নিলে ত্বকে লোমকূপের ছিদ্র বন্ধ হতে শুরু করে। তাই ত্বকে গরম পানির ভাপ নিয়মিত নিতে যাবেন না। চেষ্টা করুন, একদিন পর পর নিতে। এবং স্টিম নেয়ার পর কোন ফেসপ্যাক ম্যাসাজ করে লাগান। ফেসপ্যাক ব্যবহারের পর ত্বকে ক্ষতিকর প্রভাব এড়াতে ভালো ব্র্যান্ডের ময়েশ্চারাইজার লাগাতে ভুলবেন না!