বিনোদন সর্বশেষ

‘তুফান’ সিনেমা নিয়ে আতংকে হল মালিকরা

আজ (৮ জুন) বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সারা দেশের হল মালিকদের নিয়ে শনিবার ঢাকার একটি রেস্টুরেন্টে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। হল মালিক ছাড়াও, প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু, শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন ডিপজল, অভিনেত্রী অঞ্জনা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সভায় সিনেমা হলের সংস্কার ও নতুন হল নির্মাণে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল ঋণ দেয়ার বিষয়ে অগ্রগতি না-থাকা, চলচ্চিত্রের ১৯টি সংগঠনের হিন্দি সিনেমা চালাতে না-দেয়া, সিনেমা মুক্তি দিতে অগ্রীম রেন্টাল ফির বিরোধিতাসহ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়। এ ছাড়াও সভায় প্রদর্শক সমিতির ওয়েবসাইটের উদ্বোধন করা হয়।

এ সময় ‘লায়ন’ সিনেমা হলের কর্ণধার মির্জা আব্দুল খালেক বলেন, ‘গত ঈদে সিনেমা মুক্তি পেয়েছে ১১টি, এই ঈদে তিন থেকে চারটি সিনেমা আসবে। কিন্তু চলার মতো সিনেমা একটি। সিনেমা হল চালাবো কী দিয়ে? আমার সিনেমা হলের বয়স আজকে ৯৬ বছর। আর চার বছর পরে ১০০ বছর পূর্তি হবে। আমার ছেলেরা বলে, হল বন্ধ করে দাও, আর চারটা বছর চালাও কোনোরকম। ১০০ বছর পূর্তি করে হল বন্ধ করে দেব। এই যদি আমার অবস্থা হয় বাকি সবার অবস্থাও বুঝতে পারি। হলের ব্যবসায় লাভ নাই। ভারতীয় সিনেমা আমাদের লাগবে, সরকার নীতিমালা প্রণয়ন করেছে বছরে আটটা সিনেমা আনার। কিন্তু ১৯টি সংগঠন তা আটকে দেয়। এটা কেন? খুব খারাপ অবস্থায় আছি। হল ঠিক করতে লোন নিতে হচ্ছে। যারা লোন নিয়ে সিনেমা হল নির্মাণ, সিনেমা হল সংস্কারের কথা ভাবছে, এমন সিনেমা নির্মাণ হলে এই অবস্থা চললে লোন নিয়ে তারা বিপদে পড়বে।

যশোরের ‘মণিহার’ সিনেমা হলের জিয়াউল হক মিঠু বলেন, দেশীয় চলচ্চিত্রের মান অত্যন্ত নিম্নমুখী হওয়ায় সবাই ব্যবসায়ীক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। সিনেমা হল খোলা রেখে সবাই লোকসান গুনছেন। এর মধ্যে ভালো সিনেমাগুলো নিতে হলে অতিরিক্ত অগ্রীম রেন্টাল দিয়ে সিনেমা নিতে হয়। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সকলের এক হয়ে একটা সিদ্ধান্তে আসা উচিত। ভারতীয় সিনেমা আমদানি নিয়েও অনেক বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়। এমন অবস্থা তৈরি করা হলে সিনেমা হল ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে।

তুফান নিয়ে আতঙ্কে আছি, রেন্টাল নিয়ে সিনেমা চালানো সম্ভব না। শোনা যাচ্ছে অনেক টাকা অগ্রীম টাকা দিয়ে সিনেমা আনতে হবে। আমাদের পক্ষে ১০ লাখ, ১৫ লাখ টাকা দিয়ে সিনেমা আনা সম্ভব না। বলেন শরফুদ্দিন এলাহি সম্রাট। তিনি গাজীপুরের ‘ঝংকার’ সিনেমা হলের মালিক।

সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন উজ্জল বলেন, বাংলাদেশের সিনেমা হল মালিকদের কি কোনো দায়বদ্ধতা থাকবে, নাকি আমাদের সিনেমাহলগুলো ওপেন থাকবে? আমরা যে কোনো সিনেমা প্রদর্শন করতে পারব সেটা বাংলাদেশের নিয়মনীতি মেনে। একটি সিনেমা আমদানি করা হলে আগের দিন পর্যন্ত সবাই সংশয়ে থাকে সিনেমা চলবে নাকি চলবে না। শুক্রবার সিনেমা মুক্তি পাবে বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় জানতে পারি সিনেমা আগামীকাল মুক্তি পাবে। এমন হলে দর্শক জানবে কীভাবে, হল চলবে কীভাবে? এ অবস্থা থেকে বের হতে হবে। সিনেমা যেটা আসবে এক সপ্তাহ আগে থেকে আমাদের জানাতে হবে। হিন্দি সিনেমা চালাতে গেলে অনেক বাঁধা পেতে হয়, সরকার আমাদের পারমিশন দিয়েছে, আমরা নিয়ম মেনে সিনেমা চালাব। কারো বাঁধা মানতে যাব না।

তিনি আরও বলেন, এই চলচ্চিত্র শিল্পীকে বাঁচানোর জন্য আমরা সকলের সহযোগিতা চাই। এই শিল্পকে আমরা একটা ছাতার মধ্যে আনার চেষ্টা চালাচ্ছি। আমাদের ভুল-ত্রুটি থাকবে সেগুলো সংশোধন করে এগিয়ে যেতে হবে। আগামী দিনে সবাই একসঙ্গে কাজ করব।হ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *