আন্তর্জাতিক

১৬তলা থেকে পড়ে পুতিন-ঘনিষ্ঠের রহস্যজনক মৃত্যু

ফের রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ এক আধিকারিকের রহস্যজন্যক মৃত্যু। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ জোগানের মূল দায়িত্বে ছিলেন এ দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্ত্রী ৫৮ বছর বয়সি মারিনা ইয়ানকিনা। বুধবার সেন্ট পিটার্সবার্গের একটি বহুতলের নীচে পড়ে থাকতে দেখা যায় তার মরদেহ।

মন্ত্রণালয়ের ওয়েস্টার্ন মিলিটারি ডিসট্রিক্ট-এর ফাইনান্স ডিরেক্টর ছিলেন তিনি।

প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, ১৬তলার জানালা থেকে পড়ে যান মারিনা। বেশ কিছু মিডিয়া রিপোর্টে একে ‘আত্মহত্যা’ বলা হয়েছে। তবে নিছকই পড়ে যাওয়া, আত্মঘাতী হওয়া, নাকি ‘খুন’, তা নিয়ে রহস্য ঘনিয়েছে। তদন্তকারীরা এখনো মারিনার মৃত্যু নিয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছননি।

গত বছর ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রুশমহলে এমন একাধিক রহস্যজনক মৃত্যু ঘটে গিয়েছে। তাতে নবতম সংযোজন মারিনার নাম।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, বুধবার ভোরে সেন্ট পিটার্সবার্গের কালিনিনস্কি এলাকায় একটি বহুতলের পাশে ফুটপাতে পড়ে থাকতে দেখা যায় মারিনার দেহ। এক পথচারী প্রথম দেখতে পান। অ্যাপার্টমেন্টটি মারিনার নয়, তার স্বামীর।

মনে করা হচ্ছে— ১৬তলার জানালা থেকে পড়ে যান তিনি। ফুটপাতের যেখানে মারিনার দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়, তার ঠিক উপর বরাবরই ঐ জানালাটি। ঐ আধিকারিকের বেশ কিছু ব্যক্তিগত জিনিস ও নথিপত্র মিলেছে ১৬তলার ব্যালকনিতে।

এ বছরই ফেব্রুয়ারি মাসের গোড়ায়, রুশ মেজর জেনারেল ভ্লাদিমির মাকারোভের মৃতদেহ উদ্ধার হয় তার বাড়ি থেকে। এ ঘটনার কিছু দিন আগে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাকে দায়িত্ব থেকে বহিষ্কার করেছিলেন।

মিডিয়া রিপোর্টে বলা হয়েছিল, আত্মহত্যা করেছিলেন মাকারোভ। যদিও এ নিয়ে এখনো বহু জল্পনা রয়েছে। রাশিয়ার সরকার-বিরোধী মানবাধিকার কর্মীদের খুঁজে বার করা, বিপজ্জনক সাংবাদিকদের চিহ্নিত করা, এ ধরনের কাজের দায়িত্ব ছিল মাকারোভের। তার মৃত্যু নিয়ে মিডিয়া রিপোর্টে জানানো হয়েছিল, বাড়িতে স্ত্রীর উপস্থিতিতে নিজের গ্যাস-চালিত শিকারি বন্দুক থেকে গুলি চালিয়ে আত্মঘাতী হয়েছিলেন মাকারোভ।

এছাড়াও যুদ্ধচলাকালীন আরো ২৩টি মৃত্যু ‘জটিল ধাঁধাঁ’ হয়ে রয়েছে। প্রত্যেকেই গত এক বছরে মারা গিয়েছেন। তারা হয় ধনকুবের, নয়তো প্রভাবশালী। মৃত্যুর মধ্যেও অনেক সাদৃশ্য রয়েছে।‘আত্মহত্যা’, না হলে ‘স্ট্রোক’। কিছু ‘দুর্ঘটনাও’ রয়েছে। যেমন সিঁড়ি থেকে কিংবা চলন্ত স্পিড বোট থেকে পড়ে যাওয়া। মৃতদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠের বয়স ৩৭। সবচেয়ে বেশি বয়স ৭৩। এদের কেউ ছিলেন দোর্দণ্ডপ্রতাপ সেনা অফিসার, কেউ তেল ও গ্যাস সংস্থার মালিক, কেউ শীর্ষস্থানীয় সরকারি কর্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *