সম্পাদকীয় সর্বশেষ

স্বপ্নবাজ তরুনদের স্বপ্ন পূরনে নিরন্তর ছুটে চলা এক তরুন উদ্যোক্তার

বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল রাষ্ট্র। আর এই উন্নয়নকে তরান্বিত করতে প্রয়োজন দেশের অভ্যন্তরের উন্নয়ন। প্রতিবছর দেশের চাকরীর বাজারে প্রবেশ করে লাখ লাখ তরুন। আর এদের বেশিরভাগেরই লক্ষ্য থাকে সরকারী চাকরী। তাই দেশের তরুনদের মধ্যে উদ্যোক্তা হওয়ার প্রবনতা ক্ষীন। যেকয়জন সাহস করে এই পথে আগায় তাদের মোকাবেলা করতে হয় নানা চ্যালেন্জের। প্রতিনিয়ত বাধায় ও প্রতিকূলতার সাথে টিকতে না পেরে হাল ছেড়ে দেওয়ার সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। কিন্তুু সেই ক্লান্ত পরিশ্রান্ত বিকেলে হতাশা ও গ্লানি ঝেড়ে দিয়ে যারা উঠে দাড়াতে পারে। তারাই প্রতিষ্ঠিত হতে পারে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে, তারাই সমাজে নিয়ে আসে নতুন ভোর, অংশীদার হয় দেশের সমৃদ্ধিতে।

এরকমই এক অদম্য ও তরুন উদ্যোক্ত হলেন “লিডবার্গ গ্রুপ” এর প্রতিষ্ঠাতা ও কর্ণধার জনাব রাকিব হাসান। মধ্যবিত্ত পরিবারে যার জন্ম । বেড়ে উঠা ও শৈশব – কৈশোর কেটেছে রাজধানী ঢাকাতেই। দুরন্তপনা, অমায়িক ও মিশুক স্বভাবের কারনে বরাবরই তার কদর ছিল বন্দুমহল, আত্মীয় স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীর কাছে। পারিবারিক শিক্ষা থেকেই সবসময় চাইতেন মানুষকে সর্বদা সাহায্য করতে। সবার বিপদে থাকতেন পাশে।

স্কুল কলেজের ফলাফলে মেধার স্বাক্ষর রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকেই তার মধ্যে দেখা যায় ক্যারিয়ার সচেতনতা, অন্যান্য বন্ধুরা যখন আড্ডা-আনন্দে সময় পার করেছে তিনি চেষ্টা করে গেছেন নিজের ক্যারিয়ার দৃঢ় করতে, বিভিন্ন বিষয় নিয়েছে প্রশিক্ষন, নিরলস কাজ করে গেছেন বিশ্ববিদ্যালয় ও কর্পোরেট বিভিন্ন ইভেন্টে। গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্নের পর অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরীর পাশাপাশি কাজ করে গেছেন ‘লিডবার্গ এডুকেশনে’র বিস্তৃতিতে

বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা অবস্থাতেই দেখেন উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যাচ্ছে অনেকে। বন্ধু বা সিনিয়রদের সাথে আড্ডার মাঝে জানতে পারেন দেশের বাইরে উচ্চ শিক্ষার জন্য পোড়াতে হয় অনেক কাঠখড়, পড়তে হয় অনেক ঝামেলায়। অনেকে এসব থেকে বাচতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শরণাপন্ন হলে সেখানেও হন প্রতারিত। স্তমিত হয়ে যায় উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন।

তখন থেকেই দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা নিতে শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করার আগ্রহ জন্মায় রাকিব হাসানের মনে আর সেখান থেকেই নেমে পড়েন কাজে। সেই থেকে তার নিরন্তর ছুটে চলা। বিভিন্ন জায়গায় কাজের মাধ্যমে জানতে চেষ্টা করেছেন সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া, তারপরও যখন নিজের মনকে তৃপ্ত করতে পারলেন না তখন শিক্ষার্থীদের সাহায্য করার উদ্দ্যেশে এবং ‘ইমিগ্রেশন ল’ এর ব্যাপারে বিশদভাবে জানতে ভর্তি হন আমেরিকার ‘কর্নেল ইউনিভার্টি’র ইমিগ্রেশন ল বিভাগে। এখনও এই বিষয়ের উপর চালিয়ে যাচ্ছেন উচ্চতর গবেষনা। তার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দিয়ে যাচ্ছেন প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা।

আন্তরিকতা ও সততার সাথে কাজ করায় ইতিমধ্যে লিডবার্গ এডুকেশন সুনাম কুড়িয়েছে শিক্ষার্থীদের মাঝে। অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি প্রতিষ্ঠানটিকে করেছেন আস্থা ও ভরসার প্রতীকে। তার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত সহস্রাধিক তরুনকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়ে পৌঁছে দিয়েছেন তাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে।

শুধু শিক্ষার্থীদের পরামর্শ প্রদান বা সেবা দানের মধ্যেই নয় তিনি বাড়িয়েছেন তার কাজের পরিধি ঘটিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের প্রসার। শূন্য থেকে শুরু হওয়া ” লিডবার্গ গ্রুপ ” এ আজ একে একে যুক্ত হয়েছে আরো অনেক প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মী সংখ্যাও অনেক। এসব কর্মকর্তা – কর্মচারীদের বেতন ভাতা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থনৈতিক বিষয় খুবই সততা ও নিষ্ঠার সাথে পালন করে আসছে জনাব রাকিব হাসান।

তাঁর পরিচালিত প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠানে কর্মরত লোকদের সাথে তিনি স্থাপন করেছেন ভ্রাতৃত্বসুলভ সম্পর্ক। প্রগাঢ় প্রশাসনিক ঔদার্য এবং রসাত্মক ও নিরহংকারিতা আলাপচারিতায় মুখর ছিল সেই সম্পর্ক। প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেক কর্মীকে তিনি নিজের আপনজনই মনে করেন এ ব্যাপারে এক সহকর্মীর ভাষ্য, “একবার আমার মায়ের শরীর মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়েছিল আমি কোনভাবেই কি করব তা বুঝে উঠতে পারছিলাম না। সেদিন জনাব রাকিব স্যার আমার বড় ভাইয়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। কি করতে হবে ,কোথায় যেতে হবে, হাসপাতালে যাওয়া এবং যাবতীয় দিক নির্দেশনা দিয়ে সেদিন তিনি সাহায্য করেছিলেন। ব্যস্ততা এবং অফিসের সময় পার হয়ে যাওয়ার পরও তিনি এসব করতে দ্বিধাবোধ করেননি, এখনও তিনি আমার মায়ের খোঁজ খবর নেন। তার এই কাজের মাধ্যমে তিনি আমাকে চিরদিনের জন্য ঋনী করেছেন। লিডবার্গ গ্রুপ এর প্রতিটি কনাকে তিনি বেধেছেন স্নেহডোরে। ”

শুধু সহকর্মীদেরই নয়, প্রতিষ্ঠানের বাইরেও তিনি কাজ করে গেছেন নিঃস্বার্থভাবে। বেকার, অদক্ষ ও হতাশাগ্রস্ত তরুনদের জন্য তিনি হয়েছেন বটবৃক্ষ। বটবৃক্ষের ছায়া তলে জিরিয়ে যেমন পথিক পুনরায় চলার শক্তি পায়। তেমনি রাকিব হাসানের সান্নিধ্যে অনেক তরুন করেছেন নিজেেদের উন্নতি । শিক্ষকের মতো ভুল-ভ্রান্তি ঠিক করে ,সুযোগ দিয়ে, বাস্তব জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আলোকে ক্যারিয়ার বিষয়ক প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়ে সেসব তরুনদের দক্ষ ও পরিশ্রমী কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে তার অবদান অনস্বীকার্য। তার পরামর্শ, নির্দেশনা ও কাজের মাধ্যমে এসব তরুনদের মনে জুগিয়েছেন জীবন সংগ্রামে লড়াইয়ের অনুপ্রেরনা।

ভ্রাতৃত্ববন্ধন, কর্মদক্ষতা, নেতৃত্বে প্রদান, পরিশ্রমী, নিরহংকারী এরকম হাজারো গুনের মাঝে চাপা পড়ে যায় তার আরেকটি সৃষ্টিশীল গুন – ” লিখতে পারা “। ছাত্রজীবনে পড়ালেখা এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে লেখালেখি চালিয়ে গেলেও যখন মানুষের জন্য কাজে নেমেছেন তখন থেকে কমিয়ে দিয়েছেন সাহিত্য চর্চা। কিন্তুু তার মানে এই নয় যে তিনি ভুলে গেছেন লেখালেখি, এখন কাজের ফাঁকে, ট্রাফিক জ্যামে, অলস বিকালে কিংবা নিস্তব্ধ রাতে যখনই সময় পান লিখে ফেলেন দু-চারেক লাইন।অনেকে তো এও বলে, ” রাকিব ভাই লেখালেখি চালিয়ে গেলে সৃস্টি করে ফেলতে পারতেন আরেকটি হিমু’র। ”  তার লেখা যে মানুষকে মুগ্ধ করে তার প্রমান পাওয়া যায় তার ফেসবুক প্রোফাইলে। লিখা পোস্ট করার মুহূর্তের মধ্যেই অভিব্যাক্তি আর মতামতে ভরে যায় সেসব লিখা। ভক্তগন তা শেয়ার করে ছড়িয়ে দেন অন্যদের মাঝে।

জনাব রাকিব হাসান শুধু কর্ম পরিধির প্রসার ঘটিয়েই তার কাজ সীমাবদ্ধ থাকেননি, পরিবার থেকে তিনি শিখেছিলেন কীভাবে মানুষের সেবা করতে হয়, কীভাবে তাদের পাশে দাঁড়াতে হয়। আর সে কারণেই কাজের বাইরে একজন মানুষ হিসেবে জনাব রাকিব হোসেন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে। শীতকালে অসহায় দরিদ্র শীতার্ত মানুষদের মাঝে বিতরণ করেছেন শীতবস্ত্র। এছাড়াও বিভিন্ন সময় প্রকাশে কিংবা গোপনে সাহায্য করে গেছেন এতিম- ক্ষুধার্ত- চাহিদাসম্পন্নদের।

পরিশেষে বলা যায় কাজের প্রতি একনিষ্ঠতা, সকল প্রতিকূলতাকে চ্যালেন্জ হিসেবে নেওয়ার অদম্য সাহস ও আত্মবিশ্বাস রাকিব হাসানকে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে রপান্তর করেছে। তার কর্মের মাধ্যমে তিনি ছাপ রেখেছেন মানুষের মনে। আশা ও আস্থার প্রতীক হয়েছেন অগনিত যুবকের। এখনও কেউ তার সামনে, কেউ তার অগোচরে, কেউ চায়ের আড্ডায়,কেউ অচেতন মনে কেউবা প্রাথর্নায় তার ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছে। একজন উদ্যোক্তার এর চেয়ে বেশি আর কিইবা আশা করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *