বিশ্ব বিদ্যালয় সর্বশেষ

রাবিতে সাত দশকে ১১ সমাবর্তন, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

সমাবর্তন হলো শিক্ষার্থীদের অর্জনের স্বীকৃতি প্রাপ্তির দিন। একসঙ্গে মিলিত হয়ে বেদনামধুর এই বিদায়েও থাকে বাঁধভাঙা আনন্দ। নিয়ম হলো প্রতিবছর সমাবর্তনের মাধ্যমে বিদায়ী শিক্ষার্থীদের হাতে মূল সনদপত্র তুলে দিয়ে আনুষ্ঠানিক বিদায় আয়োজন করা। অথচ নিয়ম মতো সমাবর্তন না হওয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে মূল সনদ গ্রহণের মাধ্যমে বিদায়ের সুযোগ পাচ্ছেন না রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। প্রতিষ্ঠার পর বিশ্ববিদ্যালয়টি ৭০ বছরে পা দিয়েছে, অথচ সমাবর্তন হয়েছে মাত্র ১১ বার।

সমাবর্তন প্রত্যাশী শিক্ষার্থীদের অনেকে সমাবর্তন না হওয়ায় পেছনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। সমাবর্তন না হওয়ার ফলে মূল সনদের পরিবর্তে সাময়িক সনদপত্র নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তে হচ্ছে ডিগ্রিধারীদের। এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শিক্ষার্থীরা।

জানা যায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৫৩ সালে। সর্বশেষ অর্থাৎ একাদশ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বর। প্রথম সমাবর্তনের পর ১৯৫৯, ১৯৬১, ১৯৬২, ১৯৬৫, ১৯৭০, ১৯৯৮, ২০১২, ২০১৫, ২০১৮ অনুষ্ঠিত হয়েছে যথাক্রমে দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম সমাবর্তন।

নিয়মিত সমাবর্তন না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সমাবর্তন প্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা। গণিত বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী সিফাতুল্লাহ বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় গৌরবের সঙ্গে পাড়ি দিয়েছে দীর্ঘ ৭০ বছর। কিন্তু সাত দশকের এই দীর্ঘ সময়ে এই বিদ্যাপীঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে মাত্র ১১টি সমাবর্তন। এটা হতাশাজনক। ফলে আমাদের আনুষ্ঠানিকভাবে মূল সনদ গ্রহণের সুযোগ হয়নি।

সমাজকর্ম বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী মেফতাহুল জান্নাত মনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য এক পরম চাওয়ার নাম সমাবর্তন। বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করার পর একজন শিক্ষার্থীর কাছে সমাবর্তন মানে দারুণ উপভোগ্য এক অনুভূতি। কালো রঙের গাউন-টুপি পরে শিক্ষাসনদ গ্রহণ করা গ্র্যাজুয়েটদের জন্য বিশেষ একটি মুহূর্ত। সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছি আমরা। এটা কর্তৃপক্ষের বড় ব্যর্থতা। প্রশাসনের কাছে দাবি দ্রুত আমাদের সমাবর্তনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক।

আরেক শিক্ষার্থী মাসুম বিল্লাহ বলেন, প্রতি বছরই স্নাতক, স্নাতকোত্তর পাস করে শিক্ষার্থীরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখছে। সেই শিক্ষার্থীরা চায় শিক্ষাজীবন শেষে রাষ্ট্রপতির হাত থেকে সনদ নিয়ে কর্মক্ষেত্রে যোগদান করতে। তবে দুঃখের বিষয় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন নিয়মিত না হওয়ার ফলে আমরা সেই সৌভাগ্য অর্জন করার সুযোগ পায়নি।

সমাবর্তনের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রো-ভিসি অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, এরই মধ্যে সমাবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মহামান্য রাষ্ট্রপতি আসতে পারলে আমরা খুশি হব। তিনি যতক্ষণ সম্মতি না দিচ্ছে ততক্ষণ আমরা তারিখ ঘোষণা দিতে পারছি না। আমরা উদ্যোগ নিয়েছি যাতে সমাবর্তন তাড়াতাড়ি অনুষ্ঠিত হয়। মহামান্য রাষ্ট্রপতি যতক্ষণ না অনুমতি দিচ্ছেন আমরা আয়োজন করতে পারছি না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *