বিদেশ শিক্ষা সর্বশেষ

বিদেশি বিশ্ববিদ্য়ালয়গুলিকে ভারতে ক্যাম্পাস খোলার অনুমতি দেয়া হতে পারে

ভারতে উচ্চশিক্ষার বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে ইউনিভার্সিটি গ্র্য়ান্টস কমিশন (ইউজিসি)। তারা প্রস্তাব দিয়েছে, বিদেশি নামী বিশ্ববিদ্য়ালয়গুলিকে ভারতে ক্যাম্পাস খোলার অনুমতি দেয়া হোক। তাদের চূড়ান্ত খসড়া শিগগিরই সংসদে পেশ করা হবে। সেই বিল পাস হওয়ার পর বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ভারতে প্রবেশের পথে আর কোনো বাধা থাকবে না।

মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানাচ্ছে, খুব দ্রুত যাতে বিল পাস যাতে হয়, তার চেষ্টা করা হচ্ছে। এখন বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলি সরাসরি ভারতে ক্যাম্পাস খুলতে পারে না। সেই বাধা দূর করতে চাইছে ইউজিসি।

তাদের খসড়ায় বলা হয়েছে, বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলি ভারতে তাদের ক্যাম্পাস খুলতে পারবে, অধ্য়াপক নিয়োগ করতে পারবে, ছাত্রছাত্রীকে ভর্তি করাতে পারবে, পড়াতে পারবে এবং তাদের কোর্স শেষ হওয়ার পর সার্টিফিকেট দিতে পারবে। তারা হবে স্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়।

বিশ্বের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে পড়ার জন্য মেধাবী পড়ুয়ারা এখন যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যান। সেই সুযোগ তারা ভারতেই পেয়ে যাবেন। এর ফলে শুধু ভারতের পড়ুয়ারা নন, বাংলাদেশ-সহ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ছাত্রছাত্রীরা লাভবান হবে।

কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে আগেই জানানো হয়েছে, তারা চায়, ভারতে ছাত্রছাত্রীরা বিশ্বমানের শিক্ষা পাক। বিদেশে গিয়ে এই সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যে পরিমাণ অর্থ খরচ হয়, তার থেকে অনেক কম টাকায় তারা বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাবে। আর ভারত  শিক্ষাক্ষেত্রে একটা আকর্ষক দেশ হিসাবে পরিচিত হবে। সেটা হলে, বিশ্বের অন্য দেশ থেকে পড়ুয়ারা এখানে পড়তে আসবে।

এমন নয় যে, ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি থেকে পাস করে পড়ুয়ারা ভালো চাকরি পান না বা বিশ্বের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় সফল হতে পারেন না। কিন্তু তা সত্ত্বেও ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শিক্ষাগত মান নিয়ে প্রশ্ন আছে। বাজারের চাহিদা অনুসারে তারা কোর্স তৈরি করে না, এমন সমালোচনাও আছে। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পরিকাঠামোও বিশ্বমানের নয়।

এই অবস্থায় নামী বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলি ভারতে ক্যাম্পাস করলে সেই সব খামতি দূর হবে। সেই সঙ্গে বিশ্বমানের শিক্ষাও পেতে পারবে ছাত্রছাত্রীরা। এখন বিশেষ করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্য়ালয়গুলি সাধারণত বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সঙ্গে চুক্তি করে এবং সেখানে তাদের ছাত্রছাত্রীদের একটা সেমিস্টার পড়ার জন্য পাঠায়।

‘মেধাবীরা উপকৃত হবে’

অধ্যাপিকা উত্তরা রায় বলেছেন, বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলি যদি ভারতে ক্যাম্পাস খোলে তাহলে নিঃসন্দেহে ছাত্রছাত্রীরা উপকৃত হবেন। তাদের মান, তাদের পড়ানোর পদ্ধতি, তাদের বিষয় নির্বাচন সবই আধুনিক।

উত্তরা মনে করেন, এই সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর জন্য বেশি টাকা লাগবে ঠিকই। কিন্তু এখন ব্যাংক থেকে শিক্ষাঋণ পাওয়া যায়। তাছাড়া অক্সফোর্ডের মতো বিশ্ববিদ্যালয় যদি আসে, তাহলে সেখানে পড়ার জন্য টাকা অনেক পড়ুয়াই জোগাড় করে নেবে।

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক দেবাশিস ভৌমিকের মতে, কোনো সন্দেহ নেই, বিশ্বের সেরা বিশিববিদ্যালয় এলে  পড়ুয়াদের সামনে একটা নতুন দিগন্ত খুলে যাবে। দেশে থেকে তারা এই সুযোগ নিতে পারবে। তবে এই সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য কত টাকা দিতে হবে, সেটা নিঃসন্দেহে একটা বড় বিষয়। তাছাড়া সরকার যেন এদের কোনো করছাড় না দেয়, সেটাও দেখতে হবে। [সূত্র: ডয়চে ভেলে বাংলা]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *