বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

পৃথিবীতে প্রথম জীবের আবির্ভাবের আগেই ছিল পানির উপস্থিতি, দাবি গবেষকদের

পৃথিবীর সব জীবের জন্য পানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এখন পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের ধারণা, পৃথিবীতে প্রথম জীবের আবির্ভাব হওয়ার আগেই সেখানে পানির উপস্থিতি ছিল। কিন্তু এখন গবেষকেরা দাবি করছেন, সৌরজগতের বাইরের প্রান্তের গ্রহাণু থেকে পৃথিবীতে পানি এসেছে। খবর সিবিএসের

 

‘রিয়ুগু’ নামের একটি গ্রহাণুর বিরল নমুনাগুলো পরীক্ষা করে এমন দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। জাপানের একটি মহাকাশযানের ছয় বছর ধরে অভিযানের সময় গ্রহাণু থেকে নমুনাগুলো সংগ্রহ করা হয়েছিল।

 

পিজ ডট ওআরজি নামের একটি বিজ্ঞানভিত্তিক ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাপানের হায়াবুসা–২ নামের একটি মিশন ২০২০ সালে একটি গ্রহাণু থেকে নমুনা সংগ্রহ করে। এ অভিযানের উদ্দেশ্য ছিল জীবনের সূত্রপাত ও মহাজাগতিক উৎপত্তি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা।

 

একটি রেফ্রিজারেটরের সমান আকৃতির একটি মহাকাশযান ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করে জাপান। সেটি হীরার আকৃতির গ্রহাণু রিয়ুগুতে অবতরণ করে। জাপানি রিয়ুগু শব্দটির অর্থ ‘ড্রাগনের জায়গা’। গ্রহাণুটি পৃথিবী থেকে সাড়ে ১৮ কোটি মাইল দূরে অবস্থিত। ২০২০ সালে ওই মহাকাশ যানটি পৃথিবীতে ফিরে আসে। ফেরার সময় ওই গ্রহাণু থেকে ৫ দশমিক ৪ গ্রাম নুড়ি ও ধুলার নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে আসে।

 

এ গবেষণা–সংক্রান্ত নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে নেচার অ্যাস্ট্রোনমি নামের একটি আন্তর্জাতিক সাময়িকীতে। গবেষকেরা নিবন্ধে বলেন, কয়েকশ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে কীভাবে মহাসাগর সৃষ্টি হয়েছিল, সেই রহস্যের উত্তর দিতে পারে রিয়ুগুতেপাওয়া নমুনাগুলো। এ গবেষণায় যুক্ত ছিলেন জাপানসহ বিভিন্ন দেশের গবেষকেরা। গত সোমবার তাঁরা গবেষণা সংক্রান্ত তথ্য সামনে আনেন। তাঁরা দাবি করেন, পরিবর্তনশীল ও জৈব উপাদানসমৃদ্ধ সি-টাইপ গ্রহাণুগুলো পৃথিবীতে পানি মূল উৎস হতে পারে।

 

গবেষকেরা দাবি করেন, পরিবর্তনশীল গ্রহাণু থেকে পৃথিবীতে পানি আসার বিষয়টি এখনো বিতর্কের বিষয়। তবে রিয়ুগুতে যে জৈব উপাদান পাওয়া গেছে, তা এই পরিবর্তনশীল পদার্থের মূল উৎস হতে পারে।

 

গত জুন মাসে একদল গবেষক দাবি করেন, তাঁরা গ্রহাণুর ওই নমুনায় জৈব উপাদান আবিষ্কার করেছেন। এতে পৃথিবীতে জীবন গঠনের কিছু প্রাথমিক উপাদান পাওয়ার কথাও বলেন তাঁরা। এর মধ্যে অ্যামিনো অ্যাসিড পাওয়ার কথা উল্লেখ করেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা বলেন, এই অ্যামিনো অ্যাসিড মহাকাশে সৃষ্টি হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *