সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ১১ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রণয়ন ইউজিসির

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রণয়ন করতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। এর মধ্যে অনুন্নয়ন খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৬ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা। আর উন্নয়ন খাতের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বেশি; যদিও উন্নয়ন খাতের বাজেটের আকার এখনও পুরোপুরি চূড়ান্ত নয়।

আগামী মঙ্গলবার (০২ মে) বাজেট ওয়ার্কিং কমিটি (বিডব্লিউসি) এবং বুধবার (০৩ মে) বাজেট ম্যানেজমেন্ট কমিটির (বিএমসি) সভায় এ বাজেট উত্থাপন করা হবে। পরবর্তীতে আগামী ১৫ মে’র মধ্যে ফাইন্যান্স কমিটিতে (এফসি) পুনরায় বাজেট উত্থাপন করা হবে। সবশেষ ২১ মে ইউজিসির পূর্ণ কমিশন সভায় এ বাজেটের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে।

ইউজিসির অর্থ ও হিসাব বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য ইউজিসির প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ১০ হাজার ৯২৮ কোটি টাকার কিছু বেশি। চলতি অর্থ বছরে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বরাদ্দ ছিল ১০ হাজার ৪৪৪ কোটি ৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৬ হাজার ২৩ কোটি ৬০ লাখ টাকার রাজস্ব বাজেট এবং ৪০টি প্রকল্পের অনুকূলে ৪ হাজার ৪২০ কোটি ৪৪ লাখ টাকার উন্নয়ন বাজেট ছিল।

জানা গেছে, দেশে বর্তমানে ৫৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সরকার অর্থ বরাদ্দ দেয় ইউজিসির মাধ্যমে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের আর্থিক চাহিদার বিষয়টি কমিশনকে প্রস্তাব আকারে জানায়। পরবর্তীতে কমিশন প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করে বাজেট প্রণয়ন করে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের বলেন, আগামী অর্থবছরে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কত টাকা বরাদ্দ পাবে তার একটি খসড়া তৈরি করা হয়েছে। তবে এটি এখনো চূড়ান্ত নয়। কেননা উন্নয়ন খাতে কত টাকা বরাদ্দ দেওয়া হবে সেটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আজ (রোববার) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে উন্নয়ন বাজেটের বিষয়ে আমাদের একটি সভা রয়েছে। সেখানে এ বিষয়ে কিছুটা ধারণা পাওয়া যেতে পারে।

ইউজিসির পূর্ণকালীন এই সদস্য আরও বলেন, উন্নয়ন খাতের বাজেট চূড়ান্ত না হলেও অনুন্নয়ন খাতের বাজেট চূড়ান্ত। অনুন্নয়ন খাতে সরকার ৫ হাজার ১২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিজস্ব আয় এক হাজার ৩০০ থেকে ১৪০০ কোটি টাকা। ফলে এই খাতে সব মিলিয়ে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার মতো বরাদ্দ থাকছে। উন্নয়ন খাতের বরাদ্দের বিষয়ে বিডব্লিউসি, বিএমসি এবং এফসির সভা শেষে জানানো যাবে।

গবেষণায় বরাদ্দ বাড়ছে
আগামী অর্থ বছরে মূল বাজেট বাড়ানোর পাশাপাশি গবেষণা খাতেও বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। চলতি অর্থ বছরে গবেষণায় বরাদ্দ ছিল ১৫০ কোটি টাকা। আগামী অর্থ বছরে যা বেড়ে ১৭৪ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। ফলে গবেষণায় ২৪ কোটি টাকা বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে।

গবেষণায় বরাদ্দ বাড়ানো প্রসঙ্গে ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন, আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণায় অনেক পিছিয়ে রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গবেষণা কার্যক্রম বাড়ানোর জন্য জোর দেওয়া হচ্ছে। আমরা বাজেটে গবেষণায় বরাদ্দ বাড়াচ্ছি। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রায়োগিক গবেষণায় বেশি অর্থ ব্যয় করতে পারবে।

সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ ঢাবিতে
চলতি অর্থবছরের ন্যায় আগামী অর্থবছরেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ বরাদ্দ থাকছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ঢাবির জন্য প্রায় সাড়ে ৮০০ কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরে ঢাবির জন্য মোট প্রস্তাবিত বাজেটের পরিমাণ ধরা হয়েছে ৮২৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৭০০ কোটি টাকা রাজস্ব বাজেট। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় ৭৮ কোটি টাকা। এছাড়া স্থিতি হিসেবে রয়েছে ৪০ কোটি টাকা।

ঢাবির ক্ষেত্রে বরাদ্দ বেশি রাখার কারণ জানতে চাইলে  প্রফেসর ড. মো. আবু তাহের বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকের সংখ্যা বেশি। তাদের কার্যক্রমের পরিধি অনেক বিস্তৃত। স্বাভাবিকভাবে বাজেটে তাদের বরাদ্দের পরিমাণও বেশি হবে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *