স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা

দেশেই কিট উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করেছে বিসিএসআইআর

করোনাভাইরাস শনাক্তে দেশেই কিট উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করেছে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর)। সংগঠনটির নেতৃত্বে এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় উদ্ভাবিত এই কিটে স্বল্প খরচ এবং বর্তমানে ব্যবহৃত কিটের তুলনায় ১০ গুণ নির্ভুল ফল পাওয়া যাবে।

মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিএসএমএমইউয়ের বি ব্লকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ‘বিসিএসআইআর কোভিড কিটে’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিসিএসআইআরের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আফতাব আলী শেখের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, বিশেষ অতিথি অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসএমএমইউয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আফজালুন নেছা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আহসান।

অনুষ্ঠানে কিটের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, এই কিটের ন্যূনতম শনাক্তকরণ ক্ষমতা ১০০ কপি ভাইরাস/মি.লি. যেখানে অন্যান্য আমদানি করা কিটগুলোর ন্যূনতম শনাক্তকরণ ক্ষমতা ১০০০ কপি ভাইরাস/মি.লি.। অর্থাৎ এই কিট দ্বারা খুবই সূক্ষ্ম ও ন্যূনতম ভাইরাসকেও শনাক্ত করা যাচ্ছে। ফলে রোগের উপসর্গ প্রকাশের আগেই ভাইরাসের উপস্থিতি জানা সম্ভব হবে।

এদিকে, করোনা শনাক্তকরণে আরটিপিসিআর পরীক্ষাকে গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড ধরা হয়। কিন্তু এই ধরনের কিট অত্যন্ত ব্যয়বহুল। প্রতিটি পরীক্ষায় খরচ হয় আনুমানিক ৩০০০-৩৫০০ টাকা। যার বেশিরভাগই রাষ্ট্রকে ভর্তুকি দিতে হয়।

বিসিএসআইআরের করোনা কিটের বৈশিষ্ট্যঃ

*  বিসিএসআইআর-কোভিড কিটটি M জিনকে টার্গেট করে করা হয়েছে। M জিনের Mutation তুলনামূলক কম ও বিশ্বে প্রথম M জিনকে টার্গেট করে কোভিড ডিটেকশন কিট আবিষ্কৃত হয়েছে।

* এটির জন্য যে primer এবং probe ব্যবহার করা হয়েছে তা বিসিএসআইআর এর বিজ্ঞানীরা ডিজাইন করেছেন। যার ফলে কিটটি বাজারে প্রচলিত কিটের চেয়ে আলাদা এবং ইউনিক।

* উদ্ভাবিত কিটের Specificity, Sensitivity এবং Accuracy গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড এর সমমান ও বাণিজ্যিক কিটগুলির থেকে উন্নতমানের।

* কিটটির Limit of Detection (LOD) ১০০ কপি ভাইরাস/মি.লি. যা বাজারে প্রচলিত কিট এর চেয়ে অনেক কম, তাই কিটটি ইনফেকশনের শুরুতেই কোভিড-১৯ শনাক্ত করতে সক্ষম।

* এই কিটটি সকল ধরনের ভ্যারিয়েন্ট (Alpha Beta, Gamma, Delta, Omicron, etc.) শনাক্ত করতেও সক্ষম।

* এটি Glycogen ব্যবহার করে RNA extraction পদ্ধতি উদ্ভাবন করায় সল্প খরচে করোনা পরীক্ষা করতে সক্ষম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *