খোলা কলম সম্পাদকীয় সর্বশেষ

দীর্ঘ স্টাডি গ্যাপ থাকা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষায় তাদের পাশে ‘লিডবার্গ এডুকেশন’

নিলয় আহমেদ ঢাকার একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১২ সালে সম্পন্ন করেন বিবিএ। ইচ্ছা ছিল এমবিএ সম্পন্ন করে চাকরী জীবনের ক্যারিয়ার সূচনা করবেন, কিন্তুু মানুষ যেভাবে চায় সেভাবে নয়, ভাগ্য বিধাতা মানুষের ভাগ্যকে লিখেন নিজের মতো করে। তাইতো নানা চড়াই-উতরাইয় পেরিয়ে আমাদের জীবন সংগ্রামে এগিয়ে যেতে হয়। নিলয়ের বেলায়ও তাই। আর্থিক দৈন্যতা ও পারিবারিক সামর্থ্য না থাকায় হাতে বইয়ের বদলে তুলে নিতে হয় পরিবারের দায়িত্ব। ফলশ্রতিতে সার্টিফিকেটের অভাবে কর্মক্ষেত্রে হয়েছেন অবমূল্যায়িত,হেয় হয়েছেন সমাজে, করতে পারেননি নিজের ক্যারিয়ারকে সমৃদ্ধ। আজ এক দশক পরে যখন পিছনে ফিরে তাকান তখন হতাশা আর ব্যর্থতার গ্লানি তাকে বিষন্নতায় ভোগায়। তাইতো আবারো শুরু করতে চান পড়ালেখা, করতে চান নিজের ক্যারিয়ারকে সমৃদ্ধ, পূরন করতে চান মনের ভিতরে জিয়িয়ে রাখা স্বপ্নকে।

কিন্তুু দেশের শিক্ষাব্যবস্হা ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে তা অনেকটাই প্রতিকূল। সাধারনত দেশের সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এত বছরের স্টাডি গ্যাপ থাকা শিক্ষার্থীদের গ্রহন করা হয় না,অন্যদিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে সাবজেক্টসংখ্যা খুবই সীমিত হওয়ার পাশাপাশি এর মান নিয়েও রয়েছে যথেষ্ট প্রশ্ন। আর উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ থাকলেও কর্মক্ষেত্রে ও সামাজিক ভাবে এর মূল্যায়ন কিরকম তা আমাদের সবারই জানা।

তাইতো নিলয়ে’র মতো এরকম হাজারো তরুনদের অবস্থা চিন্তা করে তাদের উচ্চশিক্ষার স্বপ্নপূরনের সুযোগ করে দিতে তাদের আশার আলো হয়ে এসেছে লিডবার্গ এডুকেশন। প্রতিষ্ঠানটি সাধারন শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দীর্ঘ স্টাডি গ্যাপ থাকা শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষার ব্যাপারে সবধরনের সহযোগীতা করে থাকে। তাই তাদের কাজের প্রক্রিয়া পাঠকদের কাছে তুলে ধরতে একাডেমিক ডায়েরী  সরাসরি কথা বলেছে লিডবার্গ এডুকেশনে’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে। জানতে চেষ্টা করেছে কীভাবে তারা শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করছে, ভেতর থেকে দেখতে চেয়েছে তাদের প্রক্রিয়া।

প্রথমেই একাডেমিক ডায়েরীকে অফিসে আমন্ত্রণ ও শুভেচ্ছা জানায় লিডবার্গ এডুকেশনে’র স্টুডেন্ট কনসালট্যান্ট মিস শিউলি। তিনি আমাদেরকে শিক্ষার্থীদের বাইরে যাবার ক্ষেত্রে প্রথম প্রক্রিয়া ‘অ্যাসেস্টমেন্ট’ এর গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, যখনই উচ্চশিক্ষার ব্যাপারে কোন শিক্ষার্থী আমাদের কাছে আসে আমরা তৎক্ষনাত একটি অ্যাসসে্টমেন্ট ফাইল তৈরী করি, এটির মাধ্যমে আমরা শিক্ষার্থীর ব্যাকগ্রাউন্ড ও চাহিদার সাথে মিলিয়ে ৫টি বিষয় যাচাই করি, এগুলো হল ১. বিশ্ববিদ্যালয় ২. কোর্স বা প্রোগ্রাম ৩. কোন শহরে অবস্থিত ৪. প্রয়োজনীয় ভাষা দক্ষতা ও ৫. টিউশন ফি। এসব তথ্যের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী শুরুতেই খুব সহজে তার উচ্চশিক্ষার কর্ম পরিকল্পনা তৈরী করতে পারে। যার ফলে তার পরবর্তীতে কোন ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে পরতে হয় না।

অ্যাসেস্টমেন্টর পর যখন কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় নির্দিষ্ট করা হয় তখন সেখানে আবেদন প্রক্রিয়ার কাজটি করে থাকে প্রতিষ্ঠানটির এডমিশন এক্সিকিউটিভ অফিসার মি. ওমর ফারুক শুভ। তার কাজের ব্যাপারে তিনি জানান, প্রথমেই আমরা শিক্ষার্থীদের নিকট হতে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সংগ্রহ করি। তারপর অত্যন্ত দক্ষতা ও সতর্কতার সহিত আমরা আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে থাকি। কারণ নির্ভুল ও সঠিক আবেদন বিশ্ববিদ্যালয় হতে অফার-লেটার প্রাপ্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিভিন্ন প্রোগ্রাম ও অফার-লেটার প্রাপ্তির বিষয়ে আমরা জানতে চাই লিডবার্গ এডুকেশনের ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স এক্স মি. তৌফিক রায়হানের কাছে, তিনি আমাদের অফার লেটার প্রাপ্তির শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নামকরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে আমাদের পারস্পারিক সহযোগীতার সম্পর্ক রয়েছে। এমনকি অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের আমরা সরাসরি প্রতিনিধি হিসেব কাজ করি। এর মধ্যে ইউএসএ, কানাডা,অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় গুলো অন্যতম। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার প্রাপ্তির বিষয়ে শিক্ষার্থীদের শংকিত হওয়ার কোন কারণ নেই।

অফার লেটার পাওয়ার পর সবচেয়ে কঠিন ধাপটি হলো এম্বাসির সামনে নিজেকে উপস্হাপন করা। এব্যাপারেও শিক্ষার্থীদের সহযোগীতা করে থাকে লিডবার্গ এডুকেশন। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র কনসালট্যান্ট মি. রাইসুল ইসলাম বলেন,বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনের পর থেকে অফার লেটার পাওয়া ও ভিসার জন্য এম্বাসির ইন্টারভিউয়ের আগ পর্যন্ত মাঝের সময়টুকুতে আমরা একজন শিক্ষার্থীকে এম্বাসির ভাইবার জন্য তৈরী করে থাকি। বিভিন্ন প্রশ্ন, সেসব প্রশ্নের উত্তর কিভাবে উপস্থাপন করতে হবে এবং এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করি। এমনকি আমরা প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য আলাদা ভাবে মক ভাইবার আয়োজন করে থাকি। এতে শিক্ষার্থী আত্মবিশ্বাসের সহিত নিজেকে উপস্থাপন করতে পারে । যা তার ভিসা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা বহুগুনে বাড়িয়ে দেয়।

সবশেষে, শিক্ষার্থীদের সেবা প্রদান ও শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিষ্ঠানটির গৃহীত কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে একাডেমিক ডায়েরীরকে জানান লিডবার্গ এডুকেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও জনাব রাকিব হাসান। তিনি জানান, উচ্চশিক্ষা মানুষের বিবেক, চিন্তা-চেতনার পরিধি বৃদ্ধি করে। দেশের সাধারন শিক্ষার্থীদের কাছে বিশ্বমানের উচ্চশিক্ষা পৌঁছে দেওয়ার ব্রত নিয়ে যাত্রা শুরু হয় এই প্রতিষ্ঠানের। তারই ধারাবাহিকতায় দীর্ঘ স্টাডি গ্যাপ থাকা শিক্ষার্থীদের দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা নিশ্চিতকরনে কাজ করে যাচ্ছি। সর্বোপরি আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীর জন্য সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিতকরনে প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকারবদ্ধ।

তিনি আরো যোগ করেন, শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার। শিক্ষা অজর্নের পথে কোন অন্তরায় থাকা উচিত না। তাই আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া তরুনদের শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে সামনে এগিয়ে যাওয়ার একটি ভীত গড়ে দিতে চাই। যাতে করে তারা হতাশার গ্লানি থেকে মুক্তি পেয়ে জীবনযুদ্ধে জয়ী হতে পারে। খুঁজে পেতে পারে নতুন আলোর দিশা এবং তা ছড়িয়ে দিতে পারে সবার মাঝে।

জনাব রাকিব হাসানের কথার সঙ্গে সুর মিলিয়ে আমরাও বলতে চাই শিক্ষা অর্জনের পথে আসলেই কোন বাধা থাকা উচিত নয়। লিডবার্গ এডুকেশন এর উদ্যোগ আসলেই প্রশংসনীয়। তারা তাদের নিরলস পরিশ্রম, ন্যায়-নিষ্ঠা, সচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে ইতোমধ্যেই শত শত শিক্ষার্থীর ভরসার প্রতীক হয়ে উঠেছে। আমরা আশা করছি সামনের দিনগুলোতেও তারা এই কাজের ধারা অব্যাহত রাখবে। হয়তোবা তাদের হাত ধরেই পরিবর্তন হতে পারে কোন শিক্ষার্থীর জীবনের গতিপথ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *