সম্পাদকীয়

দীপ্তিমান অগ্নিশিখার ন্যায় সমাজে আলোর দ্যুতি ছড়াচ্ছেন – রিফাত আরা শোভা

বিখ্যাত রুশ সাহিত্যিক লিও টলস্টয় একবার বলেছিলেন, ” জীবনের মূল মানেটা হলো নিজের সব কিছু দিয়ে মানবতার সেবা করা। ” হয়তো টলস্টয়ের এই উক্তি তাকে এত ভীষনভাবে অনুপ্রানিত করেছে, যে পার্থিব অন্যান্য বিষয় গ্রাহ্য না করে শুধু এই কথার দৃশ্যায়ন ঘটাতে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। দুঃস্থ, দরিদ্র, ক্ষুধার্ত, অসহায় যখনই কারো জন্য কাজের সুযোগ পেয়েছেন তা করেছেন নিঃস্বার্থ ও অক্লান্ত ভাবে। ক্লান্তির ছাপ শরীরে ফুটে উঠলেও তার প্রভাব পড়তে দেননি কাজে। বলছি মানবতার দুর্নিবার সৈনিক, সমাজসেবী ও শিক্ষক রিফাত আরা শোভার কথা।

রিফাত আরা শোভা শৈশব ব্রত নেন মানবসেবার জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিবেন। কিশোর বয়সে আশেপাশের বিভিন্ন মানুষের কষ্ট তাকে পীড়া দিত সবসময় চাইতেন তাদের পাশে দাড়াতে কিন্তুু অর্থ, সময় এবং অবস্থার কারনে তা সবসময় সম্ভবপর হয়ে উঠেনি, পাশাপাশি একাকী কাজ করতে গিয়ে পড়তে হত নানা প্রতীকুলতার মাঝে। এসবের সমাধান পেতে ও আরো বৃহৎ পরিসরে মানুষের জন্য কাজ করতে সমমনা আরো কয়েকজন মিলে প্রতিষ্ঠা করেন দাতব্য সংগঠন ” ইউনিভার্সাল এমিটি “।

দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন বয়সী মানুষ যুক্ত হয়ে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে এই সংগঠনের মাধ্যমে। সেবা দিয়ে যাচ্ছেন মানুষদের। সংগঠনটি অসহায় ও দুঃস্থ মানুষের মধ্যে সেবা দিয়ে আসছে নানা ভাবে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের অভাবগ্রস্থ পরিবারের শিশুদের দিচ্ছে লেখাপড়ার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন ক্রান্তিকর মুহূর্তে ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্তদের খাদ্য-পানীয়-ওষুধ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী দিয়ে তাদের সহায়তা করে আসছে। শুধুমাত্র দেশ নয় দেশের বাইরেও যেখানেই মানবতা বিপন্ন হয়। সেখানেই ছুটে চলে যায় প্রতিষ্ঠানটি। ফলশ্রুতিতে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলেও কুড়িয়েছে সুনাম। আর এসবকিছুর জন্য পিছন থেকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়ে আসছে প্রতিষ্ঠানটির কান্ডারী মিসেস রিফাত আরা শোভা।

শুধুমাত্র মানবসেবা নয় শিক্ষক হিসেবে জাতি গঠনের যে পর্বতসম দায়িত্ব তার কাধে, সেটিও পালন করে আসছে যথাযথভাবে। রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় “বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস টেকনোলজি (বিউবিটি) ” এর ইংরেজী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে শিক্ষকতা করছেন মিসেস রিফাত আরা শোভা । সেখানেও ছড়াচ্ছেন আলোর দ্যুতি। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভাষাগত দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে গঠিত ‘বিউবিটি ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব’ এর প্রোগ্রাম কোর্ডিনেটর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। এর মাধ্যমে তিনি শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ভাষার দক্ষতা বাড়াতে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তার নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে তিনি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত চ্যালেন্জ মোকাবেলায় দক্ষ ও যোগ্য প্রার্থী হিসেবে গড়ে তুলছেন।

তার বিপুল প্রতিভার আরেকটি উন্মোচিত দিক হলো রোভার স্কাউটিং। বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ, দক্ষতা ও মানবিক গুণাবলি অর্জনের মাধ্যমে সমাজ উন্নয়ন ও সেবার লক্ষ্য নিয়ে গঠিত রোভার স্কাউটের ” বিউবিটি ” শাখার গ্রুপ লিডারের দায়িত্ব পালন করছেন মিসেস রিফাত আরা শোভা । এর মাধ্যমে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া তরুনদের মধ্যে মানবসেবা ও সমাজ উন্নয়ন এবং দেশ ও জাতির প্রয়োজনে নিঃস্বার্থভাবে নিজেকে আত্মবিনিয়োগের মনোভাব গড়ে তুলতে সমর্থ হচ্ছেন।

এর পাশাপাশি উচ্চশিক্ষায় সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ‘লিডবার্গ এডুকেশনে’র একাডেমিক কাউন্সিলর পদে দায়িত্ব পালন করছেন। এই প্রতিষ্ঠানে তিনি শিক্ষার্থীদেরকে একাডেমিক বিভিন্ন বিষয়ে প্রয়োজনীয় ও কার্যপযোগী পরামর্শ প্রদান করে থাকেন। তার পরামর্শ ও দিক নির্দেশনা অনুকরন করে অনেক শিক্ষার্থী পেয়েছেন কাঙ্খিত সাফল্য। তার ব্যাপরে লিডবার্গ এডুকেশনের প্রধান নির্বাহী জনাব রাকিব হাসান বলেন,

” রিফাত আরা শোভা একজন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী, তিনি সবর্দা শিক্ষার্থীদের স্বার্থ নিয়ে চিন্তা করেন ও জীবনপযোগী পরামর্শ দিয়ে থাকেন। শিক্ষার্থীদের ইংরেজী ভাষার দক্ষতা বৃদ্ধিতে তার কাজ প্রশংসনীয়। এর পাশাপাশি তিনি মানবসেবায়ও সমাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন যা অতুলনীয়, তার মত এরকম মেধাবী একজন মানুষকে আমাদের প্রতিষ্ঠানে পেয়ে আমরা নিজেদের সৌভাগ্যবান বলে মনে করছি। ”

এছাড়াও তিনি ইংরেজী ভাষার শিক্ষকদের দক্ষতা নিরূপন সংস্থা টেসল ( Teaching English to Speakers of Other Languages – TESOL)এর দ্বিতীয় যুগ্মসচিবের দায়িত্ব পালন করছেন।

কর্মজীবনের ন্যায় শিক্ষাজীবনেও তিনি রেখেছেন প্রতিভার স্বাক্ষর। তার একাডেমিক রেজাল্টও যেকারো কাছে ঈর্ষনীয়। স্কুল কলেজে ভালো ফলাফলের পর তিনি বিউবিটি তে ভর্তি হোন ইংরেজী ভাষা ও সাহিত্যে বিভাগে। সেখান থেকে কৃতিত্বের সাথে অনার্স – মাস্টার্স সম্পন্ন করার পর আরো উচ্চতর শিক্ষার লাভের উদ্দেশ্য ভর্তি হোন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে ফলিত ভাষাতত্ত্বের উপর অর্জন করেন এম.ফিল ডিগ্রী। ইংরেজী ভাষার প্রায়োগিক দিক নিয়ে তিনি এখন পর্যন্ত ৪টি গবেষনা পত্র লিখেছেন যা প্রকাশিত হয়েছ দেশ বিদেশের বিভিন্ন জার্নালে। এছাড়াও অংশগ্রহন করেছেন বিভিন্ন কনফারেন্স ও ওয়ার্কশপে। অর্জন করেছেন বিভিন্ন পুরষ্কার, ভূষিত হয়েছেন নানা সম্মানে। তার এসব অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার প্রয়োগ আমরা দেখতে পাই তার ব্যক্তি ও কর্মজীবনে।

মিসেস রিফাত আরা শোভা জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে রেখেছেন সাফল্য ও মেধার পরিচয়।শিক্ষা,কর্ম ও সমাজসেবা সকল ক্ষেত্রেই রয়েছে তার অবাধ বিচরণ। তার কাজ ও মানবসেবার মাধ্যমে তিনি ইতোমধ্যেই সমাজে সৃষ্টি করেছেন দৃষ্টান্ত। নারীদের জন্য তিনি হলেন এক অনুকরণীয় উদাহরণ। তাই আমাদের সকলেরই উচিত তার কাছ থেকে অনুপ্রেরনা নিয়ে তা নিজেদের জীবনে প্রয়োগ করা পাশাপাশি তার জনসেবা মূলক কাজে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে অংশগ্রহন করা। তাহলেই জয় হবে মানবতার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *