চাকরি স্বায়ত্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দফতরে শিক্ষার্থীদের খণ্ডকালীন নিয়োগ কার্যক্রম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) লাইব্রেরি, রেজিস্ট্রার দফতর এবং ছাত্র-নির্দেশনা ও পরামর্শদান দফতরে শিক্ষার্থীদের খণ্ডকালীন নিয়োগ কার্যক্রম। মাত্র ছয়মাসের জন্য এ নিয়োগ দেওয়া হবে। এ জন্য প্রতিমাসে ছাত্র-ছাত্রীরা বেতন পাবেন মাত্র এক হাজার টাকা। চাকরির উদ্যোগ সাধুবাদ জানালেও বেতনের অঙ্ক নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন তারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ছয় মাসের জন্য এই খণ্ডকালীন চাকরি দেয়া হবে। ৭০-৭৫ জন এ চাকরির জন্য মনোনীত হবেন। ২৫ জন হবেন কাউন্সিলর। একজন শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীদের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করবেন। উভয় পদের জন্য বেতন হবে প্রতি মাসে মাত্র এক হাজার টাকা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিভাগ/ইনস্টিটিউটের ছাত্র-উপদেষ্টাদের সহযোগীতায় বিভাগ থেকে মনোনিত একজন অস্বচ্ছল, মেধাবী ও নিয়মিত শিক্ষার্থী সংযুক্ত ফরম পূরণ করে ছবি ও সুপারিশসহ আগামী ২৬ ডিসেম্ব বিকেল ৪টার মধ্যে দপ্তরে পাঠাবেন। আগামী ২৭ ডিসেম্বর আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের নির্বাচনী সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হবে। এ সময় অনুপস্থিত শিক্ষার্থীকে পরবর্তীতে চাকরি দেয়া হবে না।

ছাত্র-নির্দেশনা ও পরামর্শদান দপ্তর প্রতি বছর দুই মেয়াদে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শিক্ষার্থীদের খণ্ডকালীন চাকরি দেয়। একবার কাজ করা শিক্ষার্থীকে পরের ছয় মাস চাকরির জন্য মনোনীত করা হয় না।

এদিকে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য এটিকে ভালো উদ্যোগ বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা। তবে অনেক আগের নির্ধারিত বেতন স্কেল থেকে সরে এসে বাড়ানো উচিৎ বলে মত তাদের। ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন বলেন, একজন শিক্ষার্থী মাসে ১২ দিন এক ঘন্টা প্রাইভেট পড়িয়ে অন্তত ছয় হাজার টাকা পায়। সেখানে এ চাকরি করে সে মাসে অন্তত ২০ ঘন্টা কাজ করে এক হাজার টাকা পাচ্ছে। এটি সত্যিই হতাশাজনক।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উচিত শিক্ষার্থীদের তাদের বিভাগ অনুযায়ী কাজ দিয়ে দক্ষ করে তোলা। এ চাকরি হলো কেরানিদের কাজ, যা প্রশাসন স্বল্প টাকায় শিক্ষার্থীদের দিয়ে করিয়ে নিচ্ছে। আমরা মনে করি এ টাকা একজন শিক্ষার্থীর জন্য খুবই কম। এজন্য অন্তত ৮-১০ হাজার টাকা বেতন হওয়া উচিত।

এ বিষয়ে ছাত্র-নির্দেশনা ও পরামর্শদান দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মেহজাবীন হক বলেন, আমরা প্রতিটি অনুষদ, বিভাগ, ইন্সটিটিউটে এ বিজ্ঞপ্তি পৌঁছে দিয়েছি, যেন তারা তাদের মধ্য থেকে কিছু অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের এ কাজে পাঠায়। কাজ খুবই অল্প, চাইলে একজন শিক্ষার্থী এক সপ্তাহে শেষ করতে পারেন।

বেতন অনেক কম কিনা জানতে চাইলে বলেন, এই সময়ে এত অল্প বেতন সত্যিই এটা অনেক কম। কর্তৃপক্ষ চাইলে এর বেতন বৃদ্ধি করতে পারে। এতে আমাদের হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, এখানে টাকার প্রশ্ন নয়, এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করবে। তারা টাকার মাধ্যমে কাজকে মূল্যায়ন করে না, অভিজ্ঞতার জন্য কাজকে মূল্যায়ন করে। বেতন বাড়ানোর বিষয়ে আমরা পরবর্তীতে ভেবে দেখব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *