বিনোদন

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার শুভেচ্ছাদূত হলেন তাহসান

জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও অভিনেতা তাহসান খান। নিয়মিত গানের পাশাপাশি অভিনয়ও করে যাচ্ছেন। সেই সঙ্গে নানা ধরনের সমাজ সেবামূলক কাজ করে থাকেন। সম্প্রতি জানা গেল নতুন খবর।

আবারও জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের শুভেচ্ছাদূত হয়েছেন তিনি। টানা কয়েক বছর শরণার্থীদের জন্য নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। সেই ধারাবাহিকতায় সোমবার (৬ জানুয়ারি) শরণার্থীদের সঙ্গে আরও দুই বছর কাজ করার জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন।

এ প্রসঙ্গে তাহসান বলেন, ইউএনএইচসিআরের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে মানবতার জন্য কণ্ঠস্বর হিসেবে কাজ করা একটি সম্মানের বিষয়। আমি এটা ভেবে আনন্দিত যে সামনের দিনগুলোতে শরণার্থীদের জন্য আমার কাজ চালিয়ে যাব।

তিনি আরও বলেন, আমি আশা করি, ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে কাজের মাধ্যমে আমি শরণার্থীদের সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং স্থানীয় জনগণ ও শরণার্থীদের মধ্যে সম্প্রীতি আনতে একটি বড় ভূমিকা রাখতে পারব।

তাহসান খান শরণার্থীদের বিষয়ে জানতে ও জানাতে ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে কাজ করছেন ২০১৯ সাল থেকে। তিনি প্রতি বছর কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেছেন। সেইসঙ্গে শরণার্থীদের চাহিদা, চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যতের আশা সম্পর্কে মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরিতে ইউএনএইচসিআরকে সাহায্য করেছেন।

তাহসান স্বচক্ষে দেখেছেন রোহিঙ্গাদের চ্যালেঞ্জিং শরণার্থী জীবন; আর দেখেছেন কক্সবাজারে মানবিক কর্মকাণ্ড কীভাবে প্রতিনিয়ত চলমান। তিনি শরণার্থীদের সঙ্গে দেখা করেছেন, আর বুঝতে পেরেছেন তাদের বাস্তুচ্যুতির মূল কারণগুলো।

সংহতি ও সহানুভূতি প্রকাশের মাধ্যমে তিনি মানুষকে জানাচ্ছেন যে রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় তাদের বাড়ি ছেড়ে আসেনি, বরং তাদের নিজ দেশের সহিংসতা থেকে বাঁচতে শরণার্থী হতে বাধ্য হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশে ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি ইয়োহানেস ভন ডার ক্লাও বলেন, তাহসানের সঙ্গে কাজ করা খুবই আনন্দের। তার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দুর্দশা লাঘবে কাজ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে আমরা কৃতজ্ঞ।

তিনি আরও বলেন, তার অনন্য ব্যক্তিত্ব আমাদের সাহায্য করে মানুষকে বোঝাতে যে শরণার্থীরা শুধুই একটি সংখ্যা নয়, বরং তারাও মানুষ। তাদেরও আছে দুশ্চিন্তা, স্বপ্ন, চাহিদা এবং সম্ভাবনা। নিজ দেশে তাদের জীবন ধ্বংস হয়ে পড়ার পর তারা চায় শরণার্থী জীবনে একটু স্থিতিশীলতা।

তাহসান বিশ্বব্যাপী ইউএনএইচসিআরের ৪০ জন শুভেচ্ছাদূতের একজন; যারা তাদের জনপ্রিয়তা, আত্মত্যাগ ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে বিশ্বের প্রতিটি কোণে শরণার্থীদের অবস্থা ও ইউএনএইচসিআরের কাজকে তুলে ধরতে সাহায্য করেন। শুভেচ্ছাদূতরা নিয়মিত বিশ্বকে মনে করিয়ে দেন শরণার্থী ও বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মানুষদের সুরক্ষা, মর্যাদাপূর্ণ জীবন এবং তাদের দুর্দশার সমাধানের প্রয়োজনের কথা।

প্রসঙ্গত, মিয়ানমারে সহিংসতা থেকে পালাতে বাধ্য হওয়ার পাঁচ বছর পর প্রায় ৯২৩,০০০ রোহিঙ্গা শরণার্থী বর্তমানে কক্সবাজারের ঘনবসতিপূর্ণ ক্যাম্পগুলোতে আশ্রিত রয়েছে। এর পাশাপাশি প্রায় ৩০,০০০ শরণার্থী রয়েছে ভাসানচরে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *