সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

গুচ্ছের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের মান নিয়ে ক্ষোভ পরীক্ষার্থীদের

২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে প্রথমবারের মত সমন্বিতভাবে পরীক্ষা গ্রহণ করে দেশের ২০টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এরপর ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের পর ২০২২ -২৩ শিক্ষাবর্ষে ২২টি বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বিত পরীক্ষায় তাদের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনসহ (ইউজিসি) সংশ্লিষ্টদের দাবি, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার কারণে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমেছে। এ বিষয়ে একমত ভর্তিচ্ছুসহ তাদের অভিভাবকরাও। তবে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও ভর্তিচ্ছুদের অভিযোগ রয়েছে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিয়ে।

ভর্তিচ্ছুদের দাবি, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় যে প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হয় তা অত্যন্ত নিম্নমানের। আর প্রশ্নপত্রের ফ্রন্ট অনেক ছোট এবং লাইনগুলোর মাঝে পর্যাপ্ত ফাঁকা স্থান রাখা হয় না। ফলে পরীক্ষার হলে ভর্তিচ্ছুরা সাবলীলভাবে প্রশ্নপত্র পড়তে পারেন না। এটা এক ধরনের মানসিক চাপ বলে মনে করছেন তারা। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সরব এসব শিক্ষার্থীরা।

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, লিগ্যাল কাগজে এসব প্রশ্নপত্র ছাপানো হয়। যেখানে প্রতি পৃষ্ঠায় ৬৫ থেকে ৭৩টি পর্যন্ত লাইন লেখা হয়। সর্বশেষ আজ শনিবার ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নের সেট-৪ এর প্রথম পৃষ্ঠায় মোট ৭১ লাইন লেখা হয়। এর আগে গত শনিবার ‘বি’ ইউনিটের সেট-৪ এর প্রশ্নে ৬৬ লাইন লেখা হয়েছে।

এ বিষয়ে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী তাসনিম জাহান বলেন, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং গুচ্ছের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছি। কিন্তু গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নের মান যতটা নিম্ন ছিল ততটা নিম্নমানের প্রশ্ন আর কোথাও দেখিনি। আমরা বেশ মোটা অংকের ফি প্রদান করে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছি। প্রতিটি প্রশ্নপত্রে মাত্র ১০ টাকা ব্যয় করলেও প্রশ্নেত্রের মান অনেক সুন্দর হওয়ার কথা। কিন্তু এতগুলো টাকা নিয়ে তারা পুরোপুরি দায়সারাভাবে প্রশ্ন তৈরি করেছে।

এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, প্রশ্নের মান এমন হওয়ায় প্রশ্ন বুঝতেই আমাদের অনেক সময় চলে যায়। এটা দুঃখজনক। প্রশ্নের লাইনগুলো পরস্পর এত কাছাকাছি যে অনেকসময় একটা প্রশ্নের অপশন এর সাথে পরের প্রশ্নের অপশন গুলিয়ে ফেলেছি, একটা প্রশ্ন পড়তে গিয়ে অন্যটাতে চলে গেছি।

২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী আলমগীর হোসেন বলেন, গুচ্ছ পরীক্ষায় যেভাবে প্রশ্নপত্র করা হয়েছে, এরকম একটা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশ্ন যে এমন হতে পারে, এটা আমাদের ধারণারও বাইরে। এমনকি আমরা স্কুল কলেজেও এত নিম্নমানের প্রশ্নপত্র পাইনি। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা কমিটির নিকট প্রত্যাশা থাকবে তারা যেন পরবর্তীতে প্রশ্নের মান ভালো করে যাতে শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন বুঝতেই অতিরিক্ত সময় ব্যয় না করতে হয়।

এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থী তুহিন বাদশা লিখেছেন, আমাদের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন এতো হিজিবিজি করে দেওয়ার কারণ কী? এতো ছোট ছোট ফ্রন্ট এবং লাইনব্রেক স্পেস কম হওয়ার কারণে বিশ্রি লেগেছে পুরাই! আবেদন ফি কি কম নিয়েছে কতৃপক্ষ? ভর্তি পরীক্ষা খুবই প্রতিযোগিতামূলক এবং স্বল্প সময়ে হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদেরকে ১ ঘন্টায় অনেক প্রেশারে থাকতে হয়। এর উপর এরকম প্রশ্ন ছাপালে পরীক্ষার্থীরা এক প্রশ্নের উত্তর আরেকটাতে দাগিয়ে ভুল করা স্বাভাবিক।

এ বিষয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, আমি অভিযোগটি যারা প্রশ্নপত্রের দায়িত্বে আছে তাদের কাছে পৌঁছে দিবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *