২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে ২০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার ব্যক্তিগত সম্পদের মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন টেসলা সিইও ইলন মাস্ক। জেফ বেজোসের পর বিশ্বের দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে এই মাইলফলক ছুঁয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এবার নিজেই প্রথম এমন একটি রেকর্ডের মালিক হয়েছেন মাস্ক। বিশ্বে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ২০ হাজার কোটি ডলার সম্পদ হারিয়েছেন ৫১ বছর বয়সী এ ব্যবসায়ী। খবর ব্লুমবার্গের।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে টেসলার শেয়ারের ব্যাপক দরপতনের কারণে এর মালিক ইলন মাস্কের ব্যক্তিগত সম্পদেও ধস নেমেছে। নিজের সেরা সময়ে ২০২১ সালের ৪ নভেম্বর মাস্কের সম্পদ ছিল ৩৪ হাজার কোটি ডলার। কিন্তু সেটি কমতে কমতে এখন মাত্র ১৩ হাজার ৭০০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। ফলে শীর্ষ ধনীর আসনও হারাতে হয়েছে টেসলা সিইও’কে।
করোনাকালে রীতিমতো ফুঁলেফেঁপে উঠেছিল টেসলা ও মাস্কের সম্পদ। ২০২১ সালের অক্টোবরে বৈদ্যুতিক গাড়িনির্মাতা প্রতিষ্ঠানটির বাজারমূল্য প্রথমবারের মতো এক লাখ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। এর আগে এই মাইলফলক স্পর্শ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে অ্যাপল, মাইক্রোসফট, অ্যামাজন, গুগলের মূল কোম্পানি অ্যালফাবেট প্রভৃতি।
কিন্তু বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারে টেসলার আধিপত্য এখন মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে। বছর শেষের আগে দুটি মডেলের গাড়িতে মার্কিন গ্রাহকদের জন্য বিরল সাড়ে সাত হাজার ডলার ডিসকাউন্ট অফার করছে প্রতিষ্ঠানটি। পাশাপাশি, সাংহাই কারখানায় উৎপাদন কমিয়েছে বলেও জানা গেছে।
তাছাড়া, টেসলা চাপে থাকার মুহূর্তে টুইটার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন ইলন মাস্ক। গত অক্টোবরে ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্টটি কিনে নেওয়ার পর থেকে একের পর এক বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি।
এ অবস্থায় টেসলার শেয়ারের পতন এতটাই গুরুতর হয়ে ওঠে যে, ২০২২ সালে ৬৫ শতাংশ দর হারিয়েছে সেটি। আর মাস্ক টুইটারের দাম পরিশোধ করতে এ বছর টেসলা থেকে এত বেশি শেয়ার বিক্রি করেছেন যে, প্রতিষ্ঠানটি আর আর তার সম্পদের সবচেয়ে বড় উৎস নয়। স্পেসএক্সেও মাস্কের অংশীদারত্ব নেমে এসেছে ৪২ দশমিক ২ শতাংশে।
মার্কিন এই ধনকুবের অবশ্য টেসলা নিয়ে সবধরনের উদ্বেগ অস্বীকার করেছেন। বরং সুদের হার দ্রুত বাড়ানোর জন্য ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের সমালোচনা করেছেন তিনি। গত ১৬ ডিসেম্বর এক টুইটে মাস্ক বলেছেন, ‘টেসলা আগের চেয়ে ভালো কাজ করছে! আমরা ফেডারেল রিজার্ভ নিয়ন্ত্রণ করি না, এটাই এখানে আসল সমস্যা।’