স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা

কোন গ্রুপের রক্তের মানুষের স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি, কী বলছে গবেষণা

সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য শরীরের প্রতিটি কোষে রক্ত সঞ্চালন প্রয়োজন। কারণ, এই রক্তের মাধ্যমেই শরীরের কোষে কোষে অক্সিজেন পৌঁছায়। তবে কোনো কারণে মস্তিষ্কের কোষে যদি রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়, রক্তনালী বন্ধ হয়ে যায় বা ছিঁড়ে যায় তখনই স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকির সৃষ্টি হয়। বর্তমানে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। তাইতো স্ট্রোক শব্দটা শুনলেই যেন প্রাণ আতঙ্কে শিউরে ওঠে।

কিন্তু রক্তের গ্রুপ জানলে নাকি স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা কতটা তা আগেই বোঝা সম্ভব- এমনটাই দাবি করেছেন গবেষকরা। পিয়ার রিভিউ মেডিক্যাল জার্নাল নিউরোলজিতে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে এ সম্পর্কে জানানো হয়েছে।

গবেষণাপত্রে আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অফ মেরিল্যান্ডের স্কুল অফ মেডিসিনের (ইউএমএসওএম) গবেষকরা দাবি করেছেন, ৬০ বছরের নিচে যাদের বয়স তাদের মধ্যে গ্রুপ ‘এ’ রক্ত যাদের, তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। অন্যদিকে সবচেয়ে কম ঝুঁকি রয়েছে ‘ও’ গ্রুপের রক্তের মানুষদের।

গবেষকরা যাদের স্ট্রোক হয়েছে এমন প্রায় ১৭ হাজার রোগীর উপরে ৪৮ রকমের জিনের পরীক্ষা করেছেন। যাদের সবার বয়স ছিল ১৮ থেকে ৫৯ বছরের মধ্যে। এতে দেখা গেছে, ৬০ এর নিচে যাদের বয়স তাদের মধ্যে ‘এ’ রক্তের গ্রুপের মানুষদের স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ১৬ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে ‘ও’ গ্রুপের ক্ষেত্রে স্ট্রোকের ঝুঁকি ১২ শতাংশ কম।

কিন্তু কেন এই ঝুঁকির তারতম্য? সেকথা এখনো গবেষকদের ধারণায় নেই বলেই জানাচ্ছেন গবেষণাপত্রটির অন্যতম লেখক নিউরোলজিস্ট স্টিভেন কিটনার।

তার কথায়, ‌‘আমরা এখনো জানি না কেন ‘এ’ গ্রুপের স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। তবে সম্ভবত এখানে রক্ত জমাট বাঁধার সম্ভাবনা একটা ভূমিকা পালন করছে। সেখানে অণুচক্রিকা, কোষের মতোই রক্তে উপস্থিত প্রোটিন এদের সকলেরই ভূমিকা রয়েছে।’

উল্লেখ্য, রক্তনালি দিয়ে রক্ত মস্তিষ্কে পৌঁছায়। কিন্তু কোনোভাবে রক্তনালি ফেটে গেলে কিংবা তাতে জমাট বাঁধলে স্ট্রোক হয়। সে ক্ষেত্রে যত দ্রুত আক্রান্তকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে, তার উপরে নির্ভর করছে রোগীর অব্যাহতি পাওয়ার বিষয়টা।

তবে গবেষকদের নতুন এ গবেষণাকে ঘিরে আশাবাদী চিকিৎসক মহল। ধারণা করা হচ্ছে, এ বিষয়ে আরও বেশি গবেষণা হলে স্ট্রোকের আশঙ্কা কমানোর ও তাকে রুখে দেওয়ার পথ খুঁজে পাবেন চিকিৎসকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *